কক্সবাজারের উখিয়ার থাইনখালী রোহিঙ্গা শিবিরে (ক্যাম্প-১৮) ছয় হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনায় নিহত রোহিঙ্গা স্বেচ্ছাসেবক আজিজুল হকের বাবা নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে উখিয়া থানায় মামলাটি করেন। মামলায় ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২০০ থেকে ২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১১ রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মামলার খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, মাদ্রাসায় হামলা চালিয়ে ছয়জনকে হত্যার ঘটনার তদন্ত করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সূত্র জানিয়েছে, হত্যা মামলার এজাহারে প্রধান আসামি করা হয়েছে বালুখালী শিবিরের (ক্যাম্প-১৮) রোহিঙ্গা মৌলভি আকিজ ওরফে মৌলভি অলিকে। তিনি মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী ‘আরাকান স্যালভেশন আর্মি’ বা আরসার কমান্ডার হিসেবে পরিচিত। এ ছাড়া আরসার সঙ্গে যুক্ত আরও ২৪ রোহিঙ্গাকে মামলার আসামি করা হয়েছে।
রোহিঙ্গা শিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সিহাব কায়সার খান প্রথম আলোকে বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১১ রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের ধরতে ক্যাম্পে অভিযান চালানো হচ্ছে। তাঁর দাবি, ক্যাম্পে আরসা কিংবা আল-ইয়াকিন নামে কোনো সংগঠনের তৎপরতা নেই। তবে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা আরসা ও আল-ইয়াকিনের নাম ব্যবহার করে নানা অপকর্ম করেন।
গ্রেপ্তার রোহিঙ্গারা হলেন ক্যাম্প-১১, ব্লক–এ–২-এর মজিবুর রহমান; ক্যাম্প-৮, ব্লক–এফ-২৯-এর দিলদার মাবুদ ওরফে পারভেজ ও মোহাম্মদ আইয়ুব; ক্যাম্প-৯, ব্লক-জি-১৯-এর মো. ফেরদৌস আমিন, একই ক্যাম্পের ব্লক-জি-৩৯-এর আবদুল মজিদ; ক্যাম্প-১৩, ব্লক-এফ–এর মোহাম্মদ আমিন, একই ক্যাম্পের ব্লক–বি-৩–এর মোহাম্মদ ইউনুস ওরফে ফয়েজ; ক্যাম্প-১২ ব্লক-জে-৬–এর জাফর আলম; ক্যাম্প-১০, ব্লক-জি-৭–এর মোহাম্মদ জাহিদ এবং ক্যাম্প-১৩, ব্লক-ডি-২–এর বাসিন্দা মো. আমিন। আগের দিন একটি ওয়ানশুটার গান, গুলিসহ গ্রেপ্তার করা হয় মুজিবুর রহমান নামের আরেক রোহিঙ্গাকে।
৮ এপিবিএনের অধিনায়ক ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সিহাব কায়সার খান বলেন, গ্রেপ্তার ১১ জনের মধ্যে প্রথম ৫ জন ৬ রোহিঙ্গা হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। হামলার ঘটনায় এই পাঁচজন সরাসরি জড়িত ছিলেন।
গত শুক্রবার ভোররাতের দিকে থাইনখালী রোহিঙ্গা শিবিরের ভেতরে দারুল উলুম নাদওয়াতুল ওলামা আল-ইসলামিয়া মাদ্রাসায় হামলা চালান সন্ত্রাসীরা। তাদের এলোপাতাড়ি গুলি ও ধারালো দায়ের আঘাতে প্রাণ হারান ছয় রোহিঙ্গা।