কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪ আশ্রয়শিবিরে মানবিক আশ্রয়ে আছে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে সে দেশের সেনাবাহিনীর হত্যা, ধর্ষণ, অত্যাচার-নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা সাড়ে ১১ লাখ রোহিঙ্গা। গত চার বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো যায়নি। ক্যাম্পের ভেতরে জন্ম নিয়েছে ১৪টির বেশি সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। প্রত্যাবাসনবিরোধী কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো মাদক, সোনা চোরাচালান, মুক্তিপণের জন্য অপহরণ, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, খুনোখুনির মতো অপরাধের ঘটনায় জড়িত। গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের গুলিতে খুন হন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের (এআরএসপিএইচ) চেয়ারম্যান মুহিবুল্লাহ।
এ ঘটনার ২৩ দিনের মাথায় আজ ২২ অক্টোবর ভোরে উখিয়ার থাইনখালী (বালুখালী ক্যাম্প-১৮) আশ্রয়শিবিরে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হয়েছেন আরও ছয়জন রোহিঙ্গা। ক্যাম্পের পরিস্থিতিও থমথমে। ২০১৯ সালের ১ এপ্রিল থেকে রোহিঙ্গা শিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। ১৫ এপ্রিল থেকে ব্যাটালিয়ন অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন নাঈমুল হক। ক্যাম্পের বর্তমান পরিস্থিতি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা, সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর অপতৎপরতা নিয়ে আমরা কথা বলেছি তাঁর সঙ্গে।
২৯ সেপ্টেম্বর রাতে অস্ত্রধারীদের গুলিতে খুন হন রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মুহিবুল্লাহ। এখন ক্যাম্পের পরিস্থিতি কেমন?
নাঈমুল হক: হত্যাকাণ্ডের পর থেকে ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান চলছে। ইতিমধ্যে হত্যাকাণ্ডে জড়িত পাঁচ রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাঁদের একজন মো. ইলিয়াছ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এরপর ক্যাম্পের বিভিন্ন আস্তানায় অভিযান চালিয়ে ৫২টি আগ্নেয়াস্ত্রসহ ৮০ জন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীকে আটক করেছে পুলিশ। অন্যদেরও ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, রোহিঙ্গা বসতিগুলো পাহাড়ি ঢালুতে তৈরি এবং ঘিঞ্জি। রাতে অভিযান চালাতে হচ্ছে ঝুঁকি নিয়ে।
দুই ভাগে ভাগ করে চলছে অভিযান। একটি সাঁড়াশি অভিযান, অন্যটি ব্লক রেইড। আমরা প্রতিটি ক্যাম্পকে ব্লকে ব্লকে ভাগ করে ফেলছি এবং প্রতিটি ব্লকে আমাদের লোকজন যাচ্ছেন এবং অপরাধীদের ধরার চেষ্টা করছি। পাশাপাশি পুরো ক্যাম্পের ভেতরে সাঁড়াশি অভিযান চালানো হচ্ছে, এটা চলতে থাকবে। মুহিবুল্লাহ হত্যার পর ক্যাম্পে আর অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেনি। ক্যাম্পের ভেতরে যে থমথমে অবস্থার কথা বলা হচ্ছে, সেটা পুলিশি অভিযানের কারণে। ঘটনার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা অনেকগুলো অপারেশন করেছি, করছি। বিভিন্ন দুষ্কৃতকারীকে আমরা আটক করছি। ক্যাম্পের ভেতরে যত দুষ্কৃতকারী, দুর্বৃত্ত ছিল, ওরা সবাই ভয়ের মধ্যে আছে। কারণ, পুরো ক্যাম্প এখন নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা। এ ধরনের অভিযান ক্যাম্পে আগে হয়নি।
এত অভিযানের মধ্যেও আজ (২২ অক্টোবর) আরেকটা ক্যাম্পে (থাইনখালী) হামলার ঘটনা ঘটল, সন্ত্রাসীদের গুলিতে ছয়জন রোহিঙ্গা নিহত হলেন, তাঁদের মধ্যে তিনজন মাদ্রাসার শিক্ষক, দুজন ছাত্র।
নাঈমুল হক: ঠিকই বলেছেন। ঘটনার পর আমরা (জেলা প্রশাসক, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারসহ এপিবিএন কর্মকর্তারা) ঘটনাস্থলে গিয়েছি, এখনো (বিকেলে) দ্বিতীয় দফায় ঘটনাস্থলে এসেছি। তবে এখন পর্যন্ত কারা এই হামলা চালিয়েছে, কেন চালিয়েছে, তা পরিষ্কার হয়নি। এ ব্যাপারে অনুসন্ধান চলছে। পাশাপাশি সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানও চলছে। বর্তমানে ক্যাম্পের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। ক্যাম্পটি (ক্যাম্প-১৮) ৮ এপিবিএনের আওতাধীন।
এই হামলার ঘটনায় রোহিঙ্গারা সরাসরি মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী ‘আরাকান স্যালভেশন আর্মি ‘আরসা’কে (আল–ইয়াকিন নামেও পরিচিত) দায়ী করছে। আপনারা কী পেলেন?
নাঈমুল হক: রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আরসা অথবা আল–ইয়াকিন নামের মিয়ানমারের কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠী সক্রিয় নেই। তবে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা আরসা ও আল-ইয়াকিনের নাম ব্যবহার করে অপকর্ম করছে। তাদের অনেক সদস্যকে আমরা পিস্তল, আগ্নেয়াস্ত্রসহ ধরতে পেরেছি। অন্যদেরও ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে।
মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের ২৩ দিন পার হয়ে গেল। মূল হোতারা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। আপনারা এখনো সেই হোতাদের শনাক্ত করতে পারেননি, যাঁদের গুলি চালাতে দেখে সাধারণ রোহিঙ্গারা।
নাঈমুল হক: আমাদের সামনে সবকিছু পরিষ্কার। কিন্তু মুহিবুল্লাহ হত্যার কারণটা পুরোপুরি তদন্তের বিষয়। এটা নিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা কাজ করে যাচ্ছেন। অগ্রগতিও বেশ। এ বিষয়ে যদি খোলাসা করে বলে ফেলি, তখন অপরাধীদের ধরাটা কিন্তু দুষ্কর হবে। ইতিমধ্যে আমরা যাঁদের ধরেছি, অবশ্যই সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে ধরেছি। মূল হোতাদের ধরতে এপিবিএনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর আছে।
ক্যাম্পে এত আরসা (আরাকান স্যালভেশন আর্মি; আল-ইয়াকিন নামেও পরিচিত) এল কোত্থেকে?
নাঈমুল হক: ক্যাম্পের ভেতরে আরসা অথবা আল-ইয়াকিন আছে—এ কথা আমরা কখনোই বলিনি। এ নামের কোনো সশস্ত্র গ্রুপের অস্তিত্ব আমরা এখানে পাইনি। তবে আরসা এবং আল-ইয়াকিন নাম ব্যবহার করে কিছু দুর্বৃত্ত অপকর্ম করছে। তারাই আরসা, আল-ইয়াকিনের নামে অপহরণ, মাদক চোরাচালান, খুনোখুনির মতো অপকর্ম-অপরাধের কাজগুলো করছে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো রাতে সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। ১৪-১৫টি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী তৎপর থাকে। সাধারণ রোহিঙ্গারা ভীতিকর পরিস্থিতিতে থাকে—এমন প্রচারণা দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে এসেছে। আপনার কী করছেন সেখানে?
নাঈমুল হক: রাতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কারও প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ, শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছাড়া। এমনকি রোহিঙ্গারাও রাতে ক্যাম্পের বাইরে থাকতে পারে না। রাতে রোহিঙ্গারা যেখানে বাইরে থাকতে পারে না, সেখানে অন্য লোকজন কীভাবে ক্যাম্পে আসবেন? আপনারা (সাংবাদিকেরা) কেউ যদি রাতের পরিস্থিতি (ক্যাম্পের) দেখতে চান, সে সুযোগ দেওয়া হবে। এরপর বলতে পারবেন, রাতে রোহিঙ্গারা সত্যিকার অর্থে কার নিয়ন্ত্রণে থাকে। তখন দেখতে পাবেন, পুলিশ কীভাবে ডিউটি করছে। আপনি পরিসংখ্যান নিয়ে দেখেন, রাত ৯টা-১০টার পরে ক্যাম্পে অপরাধ হয় না। আগে হয়তো কিছু অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, কিন্তু ২০১৯ সালে এপিবিএন দায়িত্ব নেওয়ার পর তা বন্ধ আছে। আগে ১১ লাখ রোহিঙ্গার নিরাপত্তায় ছিল জেলা পুলিশের একটা অংশ। এখন এপিবিএনের পৃথক তিনটি ব্যাটালিয়নের দুই হাজারের বেশি সদস্য ক্যাম্পে নিরাপত্তার কাজ করছেন।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অল্প পরিমাণ জায়গায় প্রচুর মানুষ বসবাস করে। গত ছয় মাসে ক্যাম্পের ভেতর থেকে আমরা প্রচুর অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করেছি। বেশ কয়েকজন অপহৃত ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছি, সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারিদের ধরছি।
এত কিছুর মধ্যেও রোহিঙ্গারা ক্যাম্প ছেড়ে বাইরে যাচ্ছে কেন?
নাঈমুল হক: রোহিঙ্গারা বাইরে যাচ্ছে চিকিৎসার জন্য। মেডিকেল ফ্যাসিলিটিজগুলো, হাসপাতালগুলো এখনো ক্যাম্পের বাইরে। পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের ডিস্ট্রিবিউশন সেন্টার যেগুলো আছে, সেগুলোও ক্যাম্পের বাইরে। বাইরে যাওয়ার সময় আমরা তাদের আটকে দিই। তখন তারা চিকিৎসাসুবিধা নিতে ক্যাম্পের বাইরে যাচ্ছে, এ ধরনের নানা কারণ দেখিয়ে বাইরে যাচ্ছে। হাসপাতাল এবং ডিস্ট্রিবিউশন সেন্টারগুলো যদি ক্যাম্পের ভেতরে নিয়ে আসা যায়, তাহলে এ সমস্যা আর থাকবে না।
ক্যাম্পে ইয়াবা এবং সোনার ব্যবসা রমরমা। আপনারা কী করছেন?
নাঈমুল হক: আসলে ইয়াবা ক্যাম্পের ভেতরে তৈরি হয় না, বাইরে থেকে আসে। সীমান্ত দিয়ে ঢুকে চলে আসে ক্যাম্পে, এতে পুলিশের করার কিছু থাকে না। তবে ক্যাম্পের ভেতরে মজুত ও বেচাবিক্রির সময় আমরা ইয়াবাসহ হাতেনাতে অনেককে ধরেছি। আসলে ক্যাম্পের চতুর্দিকে বেষ্টনী বা কাঁটাতারের বেড়া তৈরি হয়নি। এখানে কিছু কাজ হচ্ছে। এর মধ্যে আছে কাঁটাতারের বেড়া তৈরি, কিছু চেকপোস্ট তৈরি, কিছু ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ—এগুলো যখন সম্পূর্ণ শেষ হবে, তখন কিন্তু মাদক-সোনা চোরাচালান বলেন, অস্ত্রধারীদের তৎপরতা বলেন, কিছুই থাকবে না।
ক্যাম্পের বাইরে গিয়ে কম মজুরিতে রোহিঙ্গাদের কাজ করার অভিযোগ পাই। স্থানীয় লোকজনের উচিত এ রকম রোহিঙ্গাদের প্রতিহত করা। রোহিঙ্গাদের কাজে ব্যবহার না করা। কারণ, ক্যাম্পের বাইরে গিয়ে রোহিঙ্গাদের কাজ করার ক্ষমতা নেই। কাজ করতে গেলে রোহিঙ্গাদের পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেওয়া উচিত।
ভাসানচরে কাজ করছে জাতিসংঘ, সরকারের সঙ্গে চুক্তিও হয়েছে। কক্সবাজারের রোহিঙ্গারা জাতিসংঘ, ইউএনএইচসিআরকে অভিনন্দন জানিয়ে আনন্দ মিছিল, মিষ্টি বিতরণও করেছে। সরকারের পরিকল্পনা আছে, আরও ৮০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে ভাসানচর আশ্রয়শিবিরে স্থানান্তরের। ভাসানচরে যেতে কক্সবাজারের রোহিঙ্গারা রাজি?
নাঈমুল হক: অবশ্যই যেতে রাজি। আগে ভাসানচরের রোহিঙ্গারা কক্সবাজারের রোহিঙ্গাদের মতো জাতিসংঘের সহায়তা পেত না। এখন ভাসানচরে কাজ করতে জাতিসংঘ রাজি হয়েছে, চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, এখন আর রোহিঙ্গাদের কোনো সমস্যা নেই। রোহিঙ্গারা তাদের স্বাগত জানিয়েছে, আনন্দ মিছিল হয়েছে। ভাসানচরে পাঠানো যাবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কিছুদিন আগে জাতিসংঘে প্রত্যাবাসনের পক্ষে জোরালো ভূমিকা রেখেছেন। পররাষ্ট্রনীতি বলি আর কূটনৈতিক নীতি বলি, এ ক্ষেত্রে আমরা সফল হয়েছি।
ক্যাম্পে যতগুলো সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আছে, তাদের দমন এবং সন্ত্রাসমুক্ত নিরাপদ আশ্রয়শিবির গড়তে হলে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি বলে মনে করেন?
নাঈমুল হক: সন্ত্রাসমুক্ত এবং নিরাপদ আশ্রয়শিবির গড়তে হলে এই মুহূর্তে সবার আগে স্থানীয় জনগণের সহযোগিতা দরকার। এখন ক্যাম্পের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনীসহ সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একসঙ্গে কাজ করছি। গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সেনাবাহিনীর যৌথ টহলও আছে। নামে আলাদা আলাদা বাহিনী হলেও সবাই কাজ করছি দেশের সুরক্ষার জন্য; সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য। আমার মনে হয়, বর্তমানে আমরা যেভাবে অভিযান চালাচ্ছি, সেটা যদি অব্যাহত রাখতে পারি, কোনো সমস্যা হবে না। ১১ অক্টোবর আমরা ক্যাম্পে মাইকিং করেছি—অস্ত্রধারী, সন্ত্রাসী, দুষ্কৃতকারীদের বিষয়ে তথ্য জানাতে, তাদের ধরিয়ে দিতে। সাধারণ রোহিঙ্গারা মুঠোফোনে তাদের তথ্য দিচ্ছে। আগে রোহিঙ্গাদের কিছু জিজ্ঞাসা করলে বলত, ‘কিছু ন জানি, কিছু ন দেখি।’ এখন রোহিঙ্গারাই সবকিছুর তথ্য জানাচ্ছে। ১৩ অক্টোবর আরেকটা মাইকিং করিয়েছি, দুর্বৃত্ত, দুষ্কৃতকারীদের যারা ক্যাম্পে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেবে, আমরা তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেব। শতাধিক রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের নাম-ঠিকানা লিখে পাঠিয়েছে। অভিযানের মাধ্যমে আমরা চিহ্নিত ব্যক্তিদের ধরার চেষ্টা করছি।
সাধারণ রোহিঙ্গারা দেখছে, অভিযানটা কাদের বিরুদ্ধে। আমরা যদি এভাবে অভিযানটা চালাতে পারি, তাহলে এখানে (ক্যাম্পে) আর কোনো সন্ত্রাসীর জায়গা হবে না। থাকবে না কোনো সমস্যা। সাধারণ রোহিঙ্গারাই সন্ত্রাসীদের ধরে আমাদের হাতে তুলে দেবে। এ জন্য দরকার ক্যাম্পের চারপাশে কাঁটাতারের বেড়াটা দ্রুত শেষ করা এবং কেউ যেন কাঁটাতারের বেড়াটা কেটে নিয়ে যেতে না পারে, সে ব্যবস্থা করা, ওয়াচ টাওয়ার ও চেকপোস্টগুলোর নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ করা। আমাদের যে ওয়াকওয়ে আছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেখানে টহল দেবে—পুরোটা হয়ে গেলে দেখবেন, দুষ্কৃতকারীরা ক্যাম্পের ভেতরে ঢুকতেই পারবে না, কেউ বেরও হতে পারবে না। এখন অভিযানের মুখে বেকায়দায় পড়া বেশ কিছু দুষ্কৃতকারী-সন্ত্রাসী অতীতের ভুল পথ থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে আমাদের কাছে আত্মসমর্পণ করতে চাইছে। আসলে অভিযানটা যদি সুন্দরভাবে চালানো যায়, তাহলে ক্যাম্পের সবকিছু নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। আশা করছি এক-দুই মাসের মধ্যে আমরা সফল হব।