বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির রায় ঘোষণা হবে আগামীকাল মঙ্গলবার। রায়কে কেন্দ্র করে বরগুনায় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। শহরের অলিগলিসহ প্রধান সড়কে সজাগ দৃষ্টি রাখছেন পুলিশের সদস্যসহ র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদস্যরা।
বরগুনার শিশু আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমানের এ রায় ঘোষণা করার কথা। বিচারক হাফিজুর রহমানের বসবাসের স্থল বরগুনার বঙ্গবন্ধু স্মৃতি কমপ্লেক্সেও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। একজন সহকারী উপপরিদর্শকের (এএসআই) নেতৃত্বে পুলিশের তিনজন অস্ত্রধারী সদস্য সজাগ দৃষ্টি রাখছেন বঙ্গবন্ধু স্মৃতি কমপ্লেক্সের প্রধান গেটে।
বঙ্গবন্ধু স্মৃতি কমপ্লেক্সের কেয়ারটেকার মো. সোহেল রানা বলেন, কমপ্লেক্সের তিনটি কক্ষে বরগুনার বিভিন্ন আদালতের তিনজন বিচারক বসবাস করেন। তাঁদের মধ্যে শিশু আদালতের বিচারক হাফিজুর রহমানও রয়েছেন। শিশু আদালতে রিফাত হত্যা মামলার ১৪ আসামির রায় ঘোষণা হবে, তাই এখানে বিচারকদের নিরাপত্তায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
রায়কে কেন্দ্র করে মামলার বাদী রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফের নিরাপত্তার জন্যও পুলিশের দুজন সদস্য দেওয়া হয়েছে। বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেডকোয়ার্টার্স) মহরম আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে এ মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির রায়ের সময়ও তাঁর নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিলেন জেলা পুলিশের দুজন সদস্য।
আবদুল হালিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগামীকাল আমার একমাত্র ছেলে হত্যা মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির রায় ঘোষণা হবে। রায়কে কেন্দ্র করে আমার ওপর হামলার আশঙ্কা রয়েছে। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলাম। সার্বক্ষণিক আমার সঙ্গে পুলিশ থাকায় সে শঙ্কা দূর হয়েছে।’
বরগুনা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শহিদুল ইসলাম বলেন, বিচারকদের সার্বক্ষণিকই নিরাপত্তা দেওয়া হয়। তাঁদের নিরাপত্তায় অস্ত্রধারী পুলিশ সদস্য সর্বদাই মোতায়েন থাকে। তারপরও একটি বহুল আলোচিত হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করবেন বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্সে বসবাসকারী একজন বিচারক। তাই বাড়তি নিরাপত্তার অংশ হিসেবে সেখানে পুলিশ সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।
গত বছরের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে স্ত্রী আয়শার সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পরের দিন রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বাদী হয়ে বরগুনা থানায় ১২ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি ছিলেন এ মামলার প্রধান সাক্ষী। ৩০ সেপ্টেম্বর হত্যা মামলায় প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির মধ্যে আয়শা সিদ্দিকাসহ ৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত।