রায়পুরায় আ.লীগের এক ‘বিদ্রোহী’র হামলায় আহত ৬

নরসিংদী জেলার মানচিত্র
নরসিংদী জেলার মানচিত্র

নরসিংদীর রায়পুরার হাইরমারায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এক ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীর হামলায় আরেক ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীর ছয় সমর্থক আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে হাইরমারা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে (দড়ি হাইরমারা) দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এই হামলার ঘটনা ঘটে।

দ্বিতীয় ধাপে ১১ নভেম্বর এই ইউপিতে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই সহিংসতার ঘটনা ঘটল।

আহত ব্যক্তিরা হলেন দড়ি হাইরমারা গ্রামের মো. আলমগীর হোসেনের তিন ছেলে আরিফ মিয়া (৩১), শরীফ মিয়া (২৯) ও তরিফ মিয়া (২৭) এবং সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে সাদিকুর রহমান (৩২), মৃত সারোয়ার মিয়ার ছেলে রাসেল মিয়া (৩১) ও খোকা মীরের ছেলে ফেরদৌস মীর (২৭)। তাঁদের মধ্যে ফেরদৌস মীরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানী ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাইরমারা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মাহফুজুল হক ওরফে বাবলা এবার আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পাননি। নৌকার দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন কবির হোসেন। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে চশমা প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করছেন মাহফুজুল হক। এ ছাড়া মাঠে আছেন আনারস প্রতীকে আওয়ামী লীগের আরেক বিদ্রোহী প্রার্থী কামরুজ্জামান।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে কামরুজ্জামানের নিজের এলাকায় সমর্থকদের নিয়ে টাকা দিয়ে ভোট কিনতে যান মাহফুজুল হক ও তাঁর ভাই। খবর পেয়ে কামরুজ্জামানের সমর্থকেরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁদের বাধা দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে কামরুজ্জামানের সমর্থকদের ওপর হামলা চালান তাঁরা। এতে ছয়জন আহত হন। পরে হামলাকারীরা ককটেল বের করলে মো. আসিদ (২৬) ও মো. ইমন (২৫) নামের দুজনকে আটক করেন স্থানীয় লোকজন। পরে তাঁদের রায়পুরা থানার পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়। এ ছাড়া আহত ছয়জনকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়।

নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক নাদিরুল আমিন বলেন, ‘আহত ছয়জনকে আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাঁদের সবারই শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন। এর মধ্যে পাঁচজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। গুরুতর আহত একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানী ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।’

জানতে চাইলে কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমার প্রতি জনগণের সমর্থন বেশি আছে বলে ঈর্ষান্বিত হয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন। তাঁর জনসমর্থন না থাকায় বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে মানুষকে ভয় দেখিয়ে ও টাকা দিয়ে ভোট কেনার চেষ্টা করছেন তিনি।’

অভিযোগ অস্বীকার করে হাইরমারা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মাহফুজুল হক বলেন, ‘এ ঘটনায় আমি বা আমার কোনো সমর্থক জড়িত নই। উল্টো তাঁরা আমার দুজন কর্মীকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে ককটেল দিয়ে পুলিশে দিয়েছে। আমাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে কামরুজ্জামান এই ঘটনা ঘটিয়েছেন।’

রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুর রহমান বলেন, ‘স্থানীয় লোকজনের হাতে আটক আসিদ ও ইমন নামের দুজনকে আমাদের হেফাজতে রাখা হয়েছে। এই ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’