রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো পুনরায় সরকারি উদ্যোগে চালু এবং সব শ্রমিকের বকেয়া পাওনা এককালীন পরিশোধের দাবিতে খুলনায় শ্রমিক জনসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার বিকেলে নগরের খালিশপুরে অবস্থিত ক্রিসেন্ট জুট মিল গেটে ওই জনসভার আয়োজন করে ‘শ্রমিক-কৃষক-ছাত্র-জনতা ঐক্য পরিষদ’ নামক একটি সংগঠন।
জনসভায় বক্তারা বলেন, মহামারি করোনার প্রভাবে যখন মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছে না, শ্রমজীবী ও কর্মজীবী মানুষ যখন প্রতিদিন তাঁর কাজ হারাচ্ছেন, ক্ষুধার যন্ত্রণায় ঘরে বসে ছটফট করছেন, ঠিক তখনই বাংলাদেশ সরকার রাষ্ট্রায়ত্ত ২৫টি পাটকল বন্ধ ঘোষণা করে প্রত্যক্ষভাবে প্রায় ৫৭ হাজার শ্রমিককে বেকার করে দিয়েছে। এই মুহূর্তে হাজার হাজার শ্রমিকেরা কোথায় যাবেন, তারও কোনো ঠিক নেই। লোকসানের দোহাই দিয়ে সেদিন সরকার মিল বন্ধের ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
বক্তারা আরও বলেন, পাটকল বন্ধের সময় সরকার ঘোষণা করেছিল ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শ্রমিকদের সব বকেয়া পাওনা পরিশোধ করে দেওয়া হবে। কিন্তু তা এখনো দেওয়া হয়নি। বন্ধ হওয়ার আগে প্রতিটি মিল গেটে শ্রমিকদের পাওনাদির হিসাবের নোটিশও টাঙিয়ে দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তা–ও দেওয়া হয়নি। কোন শ্রমিক কত টাকা পাবেন, এখনো সেটা তাঁরা জানেন না। মিলগুলোকে আধুনিকায়ন করে চালু করার কথা বলা হলেও আদৌ হবে কি না, তা ধোঁয়াশার মধ্যে রয়েছে। ঘোষিত কোনো কার্যক্রমই এখনো বাস্তবায়নের মুখ দেখছে না। এ কারণেই শ্রমিকেরা আজ রাস্তায় নেমে এসেছেন, ধারাবাহিকভাবে পালন করছেন নানা আন্দোলন কর্মসূচি।
জনসভায় বক্তব্য দেন ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি গোলাম মোস্তফা, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর কেন্দ্রীয় সভাপতি ইকবাল কবীর, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক তাজ নাহার রিপন, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের খুলনা জেলা সভাপতি হুমায়ুন কবীর, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক মুনির চৌধুরী, শ্রমিক-ছাত্র-জনতা ঐক্যের নেতা রুহুল আমিন, স্টার জুট মিলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান, শ্রমিকনেতা মো. বাচ্চু ব্যাপারী, ক্রিসেন্ট জুট মিলের শ্রমিকনেতা মোশাররফ হোসেন, খালিশপুর জুট মিলের শ্রমিকনেতা আলমগীর হোসেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা সুজয় বিশ্বাস, আলীসা মুন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আল আমিন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের যশোর জেলা সভাপতি উজ্বল বিশ্বাস প্রমুখ।