রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় রাজশাহী বিএনপির শীর্ষ তিন নেতাকে জামিন দিয়েছেন আদালত। রোববার দুপুরে রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এ এইচ এম ইলিয়াস হোসাইন তাঁদের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
জামিন পাওয়া নেতারা হলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু, রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল এবং মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক ওরফে মিলন।
এর আগে রোববার দুপুরে তাঁদের পক্ষে আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন। পরে শুনানি শেষে মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এ এইচ এম ইলিয়াস হোসাইন তাঁদের আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন।
মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবী আলী আশরাফ জানান, বিএনপির তিন নেতার বিরুদ্ধে গত মার্চে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার পর তাঁরা ২৬ আগস্ট উচ্চ আদালতে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। এতে আদালত সন্তুষ্ট হয়ে তাঁদের আজ ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আত্মসমর্পণের শর্তে জামিন দেন। তাঁরা উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মেনে আজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনে আগামী ৩০ নভেম্বর এই মামলার শুনানির দিন ধার্য করেন। এতে এই তিন নেতা আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পেলেন।
গত ২ মার্চ রাজশাহীতে বিএনপি আয়োজিত বিভাগীয় সমাবেশে বক্তব্য দিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার আসামি হন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার এবং ওই তিন নেতা। রুহুল কুদ্দুস তালুকদার এখনো জামিনের আবেদন করেননি।
ওই সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকিসহ নানা অভিযোগে ১৬ মার্চ রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৪-এ (আমলি আদালত বোয়ালিয়া) মামলাটি করা হয়। মামলার বাদী রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক মুসাব্বিরুল ইসলাম।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ওই সমাবেশে বিএনপির চার নেতা পূর্বপরিকল্পিতভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার উৎখাতের হুমকি দেন। মিজানুর রহমান প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘মনে নাই পঁচাত্তর সাল?’ এই ঘোষণার পর বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে উগ্র ভাব ছড়িয়ে পড়ে। কিছু নেতা-কর্মী সমাবেশের বক্তব্য ফেসবুকে সরাসরি প্রচার করেন। সমাবেশে অন্য নেতারাও একইভাবে বক্তব্য দিয়ে বিদ্বেষ ছড়ান। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার উৎখাতের হুমকি দেন। প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দেন। এর মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধ করেছেন।
আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, বিএনপি নেতা মিজানুর রহমানকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য ৭২ ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়েছিল। তা না হলে মামলা করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। ৭২ ঘণ্টা পর তিনি গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি পাঠিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু তিনি ক্ষমা না চাওয়ায় আওয়ামী লীগ মামলার সিদ্ধান্ত নেয়।
মামলার পর গত ২৬ আগস্ট উচ্চ আদালত শুনানি শেষে ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আসামিদের জামিন মঞ্জুর করেন। কথা ছিল ২৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাঁরা রাজশাহীর আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন। সে অনুযায়ী আজ আদালতে তাঁরা আত্মসমর্পণ করে আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত জামিন পেলেন।