রাজাপুরে ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার মামলার সাক্ষীকে কুপিয়ে জখম, গ্রেপ্তার ২

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী  ছবি

ঝালকাঠির রাজাপুরে এক স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে হওয়া মামলার এক সাক্ষীকে আসামিপক্ষের লোকজন কুপিয়ে জখম করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতাকল শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার কেওতা গিঘড়া দাখিল মাদ্রাসার সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ওই সাক্ষীর বাবা ও ভাইকে পিটিয়ে জখম করা হয়। তাঁদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগে পুলিশ দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করেছে।

আহত ওই সাক্ষীর নাম মো. নবীন হোসেন (৩৫)। ওই হামলায় তাঁর বাবা শুক্তাগড় ইউনিয়নের বনকাঠি এলাকার মো. আনোয়ার হোসেন (৮৫) ও বড় ভাই মনির হোসেনও (৪৫) আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে নবীন ও মনির হোসেনকে বরিশালের শের-ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আহত ওই সাক্ষীর নাম মো. নবীন হোসেন (৩৫)। ওই হামলায় তাঁর বাবা শুক্তাগড় ইউনিয়নের বনকাঠি এলাকার মো. আনোয়ার হোসেন (৮৫) ও বড় ভাই মনির হোসেনও (৪৫) আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে নবীন ও মনির হোসেনকে বরিশালের শের-ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের বাবা মো. আনোয়ার হোসেন রাজাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন। এ ঘটনায় আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে রাজাপুর থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা করেছেন।

গতকাল রাতে অভিযান চালিয়ে রাজাপুর থানার পুলিশ হত্যাচেষ্টার মামলার আসামি মো. সাইম খান ও তাঁর বড় ভাই মো. কামরুল খানকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁরা উপজেলার শুক্তাগড় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. শাহজাহান খানের ছেলে।

মামলার এজাহার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানায়, শুক্তাগড় ইউনিয়নের নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বনকাঠি এলাকার মো. জামাল হাওলাদার (৪০) দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর পরিবার গত সোমবার রাজাপুর থানায় মামলা করে। ওই মামলার সাক্ষী ছিলেন মো. নবীন হোসেন। ওই মামলার সাক্ষী হওয়ায় গতকাল সন্ধ্যা সাতটার দিকে কেওতা মাদ্রাসার সামনে জামাল হাওলাদারের নেতৃত্বে সাইম খান, কামরুল খানসহ কয়েকজন নবীন হোসেনের ওপর হামলা চালান। তাঁরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে নবীনকে জখম করেন। এ সময় নবীনের বড় ভাই মনির হোসেন ও বাবা আনোয়ার হোসেন নবীনকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তাঁদের ওপরও হামলা চালানো হয়।

পরে স্থানীয় লোকজন রক্তাক্ত অবস্থায় নবীন, মনির ও আনোয়ারকে উদ্ধার করে রাজাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। পরে অবস্থার অবনতি হলে নবীন ও মনিরকে রাতেই বরিশাল শের-ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ ঘটনার পর জামাল হাওলাদার তাঁর দলবল নিয়ে ওই স্কুলছাত্রীরা বাড়িতে গিয়ে হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় তাঁরা ওই বাড়ির আসবাবপত্র ভাঙচুর করেছেন। এ বিষয়ে ওই ছাত্রীর মা অভিযোগ করে বলেন, ‘জামাল হাওলাদার ও ইউপি সদস্য শাহজাহান খানের ছেলেদের যন্ত্রণায় আমরা এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ। আমার মেয়েকে উত্ত্যক্ত করার ঘটনার মামলার সাক্ষীকেও তারা কুপিয়েছে। আমাদের পরিবারকে তারা বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করছে।’

জামাল হাওলাদার ও ইউপি সদস্য শাহজাহান খানের ছেলেদের যন্ত্রণায় আমরা এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ। আমার মেয়েকে উত্ত্যক্ত করার ঘটনার মামলার সাক্ষীকেও তারা কুপিয়েছে।
উত্ত্যক্তের শিকার স্কুলছাত্রীর মা

হামলা চালানোর অভিযোগের বিষয়ে ইউপি সদস্য শাহজাহান খান বলেন, ‘নবীন ও তাঁর বাবা আনোয়ার হোসেন লাঠিসোঁটা নিয়ে জামালসহ তাঁর লোকজনকে ধাওয়া করেন। পরে কী হয়েছে তা আমি জানি না।’
এ বিষয়ে রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ওই ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করা এবং হামলার ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। হামলার ঘটনায় হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার সাইম ও কামরুলকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। ওই মামলার প্রধান আসামি জামাল হাওলাদারকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।