সমাবেশে বক্তব্যের জন্য রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার মুখে পড়লেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মিজানুর রহমান মিনু ও সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু।
আজ মঙ্গলবার রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৪-এ (আমলি আদালত বোয়ালিয়া) আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মামলাটি করা হয়। রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় মহাসমাবেশে বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি, সরকার উৎখাতের ঘোষণার অভিযোগে মামলাটি করা হয়েছে।
মামলার বাদী হয়েছেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক মুসাব্বিরুল ইসলাম। মিনু ও দুলুর সঙ্গে আসামি করা হয়েছে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হককে।
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসলাম সরকার বলেন, বেলা ১১টার দিকে আদালত বসলে মামলাটি করা হয়। বিচারক সাইফুল ইসলাম মামলাটি আমলে নিয়েছেন। তিনি পরে আদেশ দেবেন বলে জানিয়েছেন।
মামলা করার সময় আদালতে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র ও রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক আসলাম সরকারসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। খায়রুজ্জামান বলেন, মামলাটি করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
মামলাটি করার জন্য রাজশাহী জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে গত ৯ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন পাঠানো হয় বলে জানায় বাদীপক্ষ। জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল আজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার মাধ্যমে আবেদনটি করা হয়েছিল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মামলার অনুমতি দিয়েছে।’
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২ মার্চ বিএনপি রাজশাহীতে বিভাগীয় সমাবেশ করে। মহানগর বিএনপির সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক। সমাবেশে বিএনপির চার নেতা পূর্বপরিকল্পিতভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার উৎখাতের হুমকি দেন। মিজানুর রহমান প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘মনে নাই পঁচাত্তর সাল?’
মামলার অভিযোগে বলা হয়, মিনুর এ ঘোষণার পর বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে উগ্রভাব ছড়িয়ে পড়ে। কিছু নেতা-কর্মী সমাবেশের এ বক্তব্য ফেসবুকে লাইভ সম্প্রচার করেন। সমাবেশে রুহুল কুদুস তালুকদারসহ অন্যরাও একইভাবে বক্তব্য দিয়ে ঘৃণা-বিদ্বেষ ছড়ান। বেআইনিভাবে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত সরকার উৎখাতের হুমকি দেন। প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দেন। এর মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ করেছেন।
রাজশাহীর আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, বিএনপির সমাবেশে আরেকটি আগস্ট ঘটানোর ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্য দেওয়ায় মিজানুর রহমানকে জাতির সামনে ক্ষমা চাওয়ার জন্য ৭২ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেওয়া হয়। তা না হলে মামলা করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। ৭২ ঘণ্টা পর মিজানুর গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি পাঠিয়ে তাঁর বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। কিন্তু তিনি ক্ষমা না চাওয়ায় আওয়ামী লীগ মামলা করার সিদ্ধান্ত নেয়।