রাজশাহী নগরের দড়িখরবোনা এলাকার সেলিনা আক্তার (৪৫) এসেছিলেন বাংলাদেশ ট্রেডিং করপোরেশনের (টিসিবি) একটি শাখায় পণ্য কিনতে। কিন্তু তাঁকে নগরের শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান চত্বর এলাকার টিসিবির গাড়ি থেকে পণ্য দেওয়া হচ্ছিল না। পণ্যের গাড়ির পাশে থাকা পুলিশ সদস্যরা মাইকে বলছিলেন, করোনার পরীক্ষা করিয়ে পণ্য কিনতে হবে। বাধ্য হয়েই সেলিনা আক্তার পাশেই একটি বুথে লাইনে দাঁড়িয়ে করোনা পরীক্ষা করালেন। করোনা পরীক্ষায় তাঁর ফলাফল কয়েক মিনিটের মধ্যেই ‘নেগেটিভ’ এল। পরে তিনি টিসিবির পণ্য পেয়ে বাড়ি চলে যান।
একই এলাকায় পণ্য কিনতে আসেন খোদেজা বেগম (৫৫)। তিনি করোনা পরীক্ষার জন্য বুথের লাইনে দাঁড়ালেও মুঠোফোন নম্বর ছিল না বলে প্রথম দফায় তাঁর পরীক্ষা হয়নি। পরে নগরের উপশহর এলাকা থেকে তিনি হাতের তালুতে লিখে আনেন ছেলের ফোন নম্বর। করোনা পরীক্ষার পর তিনিও পেলেন টিসিবির পণ্য। তিনি বলেন, ‘করোনা পরীক্ষা করেই ফেললাম। কখনো ভাবিনি, এত সহজেই করোনা পরীক্ষা করা যায়। এক মিনিটও লাগল না।’
সেলিনা আক্তার, খোদেজা বেগমের মতো টিসিবির পণ্য কিনতে না এলেও ষাটোর্ধ্ব হুমায়ূন কবির এসেছিলেন কাঁচাবাজার কিনতে। তিনিও লাইনে দাঁড়িয়ে করোনার পরীক্ষা করিয়ে নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘করোনার পরীক্ষায় আমার ভীতি ছিল। খুব সহজেই অল্প সময়ে করোনা পরীক্ষা করা গেল।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহী নগরের পাঁচটি স্থানে তিন দিন ধরে র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা চলছে। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এ পরীক্ষা করা হচ্ছে। করোনা পরীক্ষায় মানুষের সাড়া কিছুটা কম। এ কারণে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে করোনা পরীক্ষার বুথের পাশে টিসিবির পণ্য বিক্রির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেখানে সবাই করোনা পরীক্ষা করে টিসিবি পণ্য নেন।
টিসিবির রাজশাহী বিভাগীয় প্রধান মো. রবিউল মোর্শেদ বলেন, করোনার পরীক্ষা বাড়ানোর জন্য বুথের কাছে টিসিবির পণ্য বিক্রির নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। তাঁরা সমন্বয় করে করোনা পরীক্ষার মাধ্যমে টিসিবির পণ্য দিচ্ছেন। মানুষ করোনা পরীক্ষা করেই পণ্য কিনছেন।
রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন মো. কাইয়ুম তালুকদার বলেন, তাঁরা দুদিন নগরে প্রশাসনের উদ্যোগে র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার থেকে এটা সিটি করপোরেশন করছে। তিনি আরও বলেন, যত বেশি করোনা পরীক্ষা করা যাবে, তত বেশি মানুষকে আইসোলেশনে রাখা যাবে। এভাবেই সংক্রমণ কমানো সম্ভব।