রাঙামাটিতে এবার ঈদ ও সরকারি টানা ছুটিতে হোটেল-মোটেলগুলোতে ৫০ শতাংশ বুকিং হয়েছে। তবে ঈদের দ্বিতীয় দিন থেকে আরও বুকিং বাড়বে বলে আশা করছেন পর্যটনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। আগামীকাল থেকে টানা পাঁচ দিন ছুটি।
হোটেল-মোটেল ও পর্যটন ব্যবসা-সংশ্লিষ্ট লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাঙামাটি শহরে হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির ৪৩টি আবাসিক হোটেল রয়েছে। এসব হোটেলে দেড় হাজারের বেশি পর্যটক থাকতে পারবেন। ঈদ ও সরকারি টানা ছুটিতে এ পর্যন্ত ৫০ শতাংশ কক্ষ আগাম বুকিং করা হয়। তবে গত বছর ঈদের ছুটিতে ৮০ শতাংশ কক্ষ বুক হয়ে গিয়েছিল। অন্যদিকে রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সে দুটি পর্যটন মোটেল ও তিনটি কটেজ রয়েছে। এসব মোটেল ও কটেজে ৮৮টি কক্ষ রয়েছে।
রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের নৌযান ঘাট সূত্রে জানা গেছে, কাপ্তাই লেকে ভ্রমণের জন্য দেড় হাজারের বেশি নৌযান রয়েছে। এর মধ্যে শুধু রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের নৌযান ঘাটে দুই শতাধিক নৌযান রয়েছে। এ ছাড়া শহরের রাজবাড়ি ঘাট, শিল্পকলা ঘাট, সমতা ঘাট, ফিশারি ঘাট ও রিজার্ভ বাজার ঘাট থেকেও পর্যটকদের জন্য নৌযান ভাড়া দেওয়া হয়। তবে সম্প্রতি কাপ্তাই লেকে পানি কমে যাওয়ায় নৌ চলাচল সীমিত হয়ে যায়। এতে পর্যটকের সংখ্যাও কমে যাবে বলে পর্যটন ব্যবসায়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের ধারণা। তবে ঈদের আগে বৃষ্টি হলে লেকের পানি বেড়ে গেলে পর্যটকদের ভ্রমণের সুবিধা বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
২০১৭ সালে রাঙামাটিতে ভয়াবহ পাহাড়ধসের পর পর্যটকের সংখ্যা কমে যায়। তবে গত বছরে ঈদ ও দুর্গাপূজা ছুটিতে পর্যটকের সংখ্যা বেড়ে যায়। পর্যটকদের আকর্ষণ কাপ্তাই লেকে পানি সংকট সৃষ্টি হওয়ায় লঞ্চ, ট্রলার ও নৌকা চলাচল সীমিত হয়। এ কারণে টানা ছুটিতে রাঙামাটিতে পর্যটকের আগমন নিয়ে নানা আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
কাপ্তাই লেকে পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াতে বিভিন্ন পর্যটন স্পট তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে পেদা টিং টিং, গাং সাবারাং, মেজাং, সুবলং ঝরনা, সুবলং বাজার, মারমেট, চাং পাংসহ অসংখ্য স্পট তৈরি করা হয়েছে। পর্যটকেরা লেকে ভ্রমণ শেষে এসব স্পটে খেতে পারেন বা বিশ্রাম নিতে পারেন। এ ছাড়া রাঙামাটি কাপ্তাই সড়কে পাশে বড়গাঙ, বেড়ান্নে ও ইজোর নামে বেশ কিছু আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট করা হয়। সম্প্রতি শহরের লেকের পাড়ে রিজার্ভ মুখ এলাকায় পুলিশের পলওয়েল নামে একটি আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট করা হয়েছে। সেখানে প্রতিদিন স্থানীয় ও শহরের বাইরে পর্যটকেরা ভিড় করেন। অন্যদিকে রাজবাড়ি ও রাঙামাটি রাজবন বিহার দেখতে শত শত পর্যটক ভিড় করেন।
পর্যটক কমপ্লেক্স নৌযানঘাটে নৌযান সমিতির সভাপতি মো. রমজান আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা খুবই চিন্তায় রয়েছি। নৌযান চলাচলের তেমন পানি নেই। পানি না থাকলে লেকের ভ্রমণেও তেমন আকর্ষণ থাকে না। তবে আশা করছি ঈদের দু-এক দিন আগে বৃষ্টি হলে লেকের পানি বেড়ে যাবে। তখন পর্যটনের জন্যও সুবিধা হবে।
রাঙামাটি হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি মো. মঈন উদ্দিন সেলিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের ঈদের টানা ছুটিতে হোটেল-মোটেলগুলোতে আগাম বুকিং বেশি হয়নি। এখন পর্যন্ত মাত্র ৫০ শতাংশ বুকিং হয়েছে। আমরা আশা করছি ঈদের দ্বিতীয় দিন থেকে কমপক্ষে ৭০-৮০ শতাংশ কক্ষ বুকিং হবে। যেহেতু ঈদের ছুটির পর সরকারি ছুটি রয়েছে, তাই পর্যটক আরও আসবে।’
রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘লেকের পানি না থাকায় পর্যটকদের আগাম বুকিং একটু কম। আমাদের ৮৮টি কক্ষের মধ্যে ৬০ শতাংশ কক্ষ বুকিং হয়েছে।’