রঙিন ছাতা পেয়ে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস পাঁচ শতাধিক শিশুর

শিশু থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ৫৬০ জন শিশুকে নানা রঙের ছাতা উপহার দেওয়া হয়েছে। গত শনিবার দুপুরেগাজীপুরের শ্রীপুরের কেওয়া পশ্চিমখণ্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে
ছবি: সাদিক মৃধা

বিদ্যালয়ের মাঠজুড়ে নানা রঙের ছাতা মাথায় শত শত শিক্ষার্থী। দৃশ্যটি আশপাশের লোকজনের জন্য একেবারেই নতুন। কৌতূহলী স্থানীয় বাসিন্দারা কাছে গিয়ে জানতে পারেন, স্কুলের ৫৬০ জন শিশু রঙিন ছাতা উপহার পেয়েছে। বাঁধভাঙা আনন্দে মাঠজুড়ে ছাতা মাথায় শিশুরা হাঁটছে।

গাজীপুরের শ্রীপুরের কেওয়া পশ্চিমখণ্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সবুজ মাঠে গত শনিবার দুপুরে বাহারি রঙের এই ছাতার দৃশ্য চোখে পড়ে। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শিশু থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ৫৬০ জন শিশুকে নানা রঙের ছাতা উপহার দেওয়া হয়েছে। স্কুল পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি কামরুল ইসলাম নিজ অর্থায়নে এসব ছাতা উপহার দেন।

ছাতা পেয়ে শিশুদের উচ্ছ্বাস নিয়ে স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, এত ছাতা একসঙ্গে কোনো দিন দেখেননি। ছাতাগুলো পেয়ে শিশুদের কী যে আনন্দ। একটা নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত শিশুদের ছাতার প্রতি আকর্ষণ থাকে। শৈশবের মোক্ষম সময়ে এই শিক্ষার্থীরা হাতে ছাতা পেয়েছে।

বিদ্যালয়টির তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী নাঈম ইসলামের ছাতার রং সবুজ। নাঈম বলে, ‘আমরা সবাই ছাতা পেয়েছি। আমারটা সবুজ রঙের। আমার আরেক বন্ধু পেয়েছে লাল ছাতা। বৃষ্টির মধ্যেও এখন স্কুলে আসতে পারব।’ পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী জিসান খান বলে, ‘হঠাৎ দেখি অনেক ছাতা নিয়ে স্কুলে হাজির একজন। প্রথমে বুঝতেই পারিনি, এগুলো আমাদের জন্য। পরে আমাদের সবাইকে একটা একটা করে ছাতা উপহার দেওয়া হয়।’

আমার ছাতার রং স্কুল ড্রেসের সঙ্গে মিলে গেছে। আমরা সব বন্ধু ছাতা পেয়েছি। সবাই অনেক খুশি হয়েছে।
মোমেনিন আনিকা, চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী
ছাতা পেয়ে খুশি শিশু শিক্ষার্থীরা। শনিবার দুপুরেগাজীপুরের শ্রীপুরের কেওয়া পশ্চিমখণ্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে

জিসানের সহপাঠী রিয়া মনির ছাতার রংও লাল। এই রং তার পছন্দ হয়েছে। রিয়া জানায়, ছাতা পেয়ে অনেক বেশি আনন্দিত। উম্মে মোমেনিন আনিকা চতুর্থ শ্রেণি ছাত্রী। তার ছাতার রং নীল। দুপুরে সে এই ছাতা উপহার পেয়েছে। আনিকা বলে, ‘আমার ছাতার রং স্কুল ড্রেসের সঙ্গে মিলে গেছে। আমরা সব বন্ধু ছাতা পেয়েছি। সবাই অনেক খুশি হয়েছে।’

শিশুদের শিক্ষা আনন্দদায়ক করতেই এই ধারণা মাথায় আসে বলে জানিয়েছেন ছাতা উপহার দেওয়া কামরুল ইসলাম। তিনি বলেন, শৈশবে প্রত্যেক শিশুর কোমল মনে আনন্দ দরকার। সে আনন্দের সঙ্গে শিক্ষা গ্রহণ করবে, এমনটাই হওয়া উচিত। ছাতাগুলো উপহার হিসেবে দিতে পেরে তাঁরও ভালো লাগছে।

ছাতা উপহার দেওয়ার সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. আমজাদ হোসেন, রোটারী ক্লাব গাজীপুরের সভাপতি খালেদ মাহবুব মোর্শেদ, টিভি ও চলচ্চিত্র অভিনেত্রী হোসনে আরা পুতুল প্রমুখ।