রংপুরে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে।একদিনেই ৩১ জন শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ১২ জনই পুলিশ সদস্য। তিনজন নার্স। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যার পর রংপুর মেডিকেল কলেজের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এদিকে গত এক মাস সাত দিনের ব্যবধানে রংপুরে করোনাভাইরাস শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২০ জনে। এর মধ্যে সাতজন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এই ১২০ জন করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী ২৮ জন, পুলিশ সদস্য ২৩ জন, ব্যাংক কর্মী ১৯ জন এবং চিকিৎসক ৯ জন। বাকি ৪১ জন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।
জেলা করোনাভাইরাস কমিটি ও রংপুর মেডিকেল কলেজের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রংপুরে গত ২ এপ্রিল থেকে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। গত এপ্রিল মাসে রোগী ছিল ৪৪ জন। চলতি মাসের শুরুতে এক সপ্তাহের মধ্যে রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২০ জনে।
পুলিশের একজন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, মহানগর এলাকায় একটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সহ ২৩ জন পুলিশ সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় পুলিশের মধ্যেও শঙ্কা ছড়িয়ে পড়েছে।কারণ মাঠের মধ্যে সার্বক্ষণিক দায়িত্বে নিয়োজিত থাকছেন পুলিশ সদস্যরা। এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন স্থানে খাদ্য ও ত্রাণ বিতরণেও পুলিশ দায়িত্ব পালন করছেন।
মহানগর পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (ডিবি ও মিডিয়া) আলতাফ হোসেন বলেন, 'এতো সতর্কভাবে কাজ করার পরও দিন দিন পুলিশ সদস্যরা আক্রান্ত হচ্ছেন। কিন্তু এরপরও সুরক্ষা নিয়ে কাজ করে যেতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।' তবে তিনি জনগণকে আরও সচেতন হয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাচলের পরামর্শ দিয়েছেন।
এদিকে এ জেলায় দিন দিন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় মানুষজনের মধ্যে আতঙ্ক বেড়ে চলেছে। সোনালী ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংকের ১৯ জন ব্যাংক কর্মীর করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ায় লেনদেন করতে আসা মানুষজনসহ ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সোনালী ব্যাংক বাজার শাখার কার্যক্রম ইতিমধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে সোনালী ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক আবদুল বারেক চৌধুরী জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সোনালী ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, 'মানুষদের সেবা দিতে ব্যাংকে প্রতিদিন কাজ করতে হচ্ছে। কিন্তু সেভাবে কোনো সুরক্ষা নেই। ভীতি ও শঙ্কার মধ্যেও লেনদেনের কাজে মানুষদের সেবা দিয়ে চলেছি।'
জেলা সিভিল সার্জন ও জেলা করোনাভাইরাস কমিটির সদস্য সচিব হিরম্ব কুমার রায় বলেন, প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। আরও অনেক সচেতন হতে হবে। দোকানপাট খুললেও সামাজিক দূরত্ব বজায় থেকে কেনাকাটা করতে হবে। বাজারে চলাচল করতে গেলেও নিয়ম মানতে হবে। আর তা না হলে রোগী আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।