যেনতেনভাবে কাজ করে টাকা ভাগাভাগি নয়: তাজুল ইসলাম

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম
ফাইল ছবি

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, নগরের সবকিছু সিটি করপোরেশনকে দেখতে হবে। সিটি করপোরেশন নগরের মালিক। সব সংস্থাকে নিয়ে সমন্বয়ের মাধ্যমে সিটি করপোরেশনকে কাজ করতে হবে।  

চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দারহাটের বারইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত নতুন খাল খনন প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তাজুল ইসলাম এসব কথা বলেন। আজ শনিবার নগরের পূর্ব ষোলশহরের মাইজপাড়া এলাকায় এ অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।

নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে এই খাল খননের উদ্যোগ নিয়েছিল চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। এ নিয়ে দ্বিতীয় দফায় খাল খননকাজের উদ্বোধন করা হলো। এর আগে ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারি প্রথম দফায় কাজের উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। তবে উদ্বোধনের পর কোনো কাজ হয়নি। সম্প্রতি নগরের উন্মুক্ত নালা-নর্দমা ও খালে পড়ে চারজনের মৃত্যু হয়। এসব ঘটনায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) পরস্পরের বিরুদ্ধে দায় চাপিয়ে আসছিল। এর মধ্যে আজ শনিবার দুপুরের দিকে এই খাল খননকাজের উদ্বোধন করলেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী।

আজকের অনুষ্ঠানে তাজুল ইসলাম বলেন, সিটি করপোরেশনকে নগরের রাস্তাঘাট ঠিক রাখতে হবে। নালা-নর্দমা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। এসব কাজে নগরের বাসিন্দাদেরও ও দায়িত্ব আছে। করপোরেশনের কাজ নিয়ে কোথাও কোনো অভিযোগ থাকলে সেসব নাগরিকদের জানানো উচিত।

নতুন খাল খনন প্রকল্পের কাজ ঠিকভাবে করার নির্দেশনা দিয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, যেনতেনভাবে কাজ করে টাকা ভাগাভাগি করে নিয়ে যাবেন, তা হবে না। প্রকল্পের কাজ ঠিকভাবে হচ্ছে কি না, তা মন্ত্রণালয় থেকে তদন্ত করা হবে।
অনুষ্ঠানে তাজুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রামকে বাংলাদেশের দ্বিতীয় রাজধানী বলা হয়। শুধু প্রধানমন্ত্রী আর মন্ত্রীদের এই শহরের গুরুত্ব অনুধাবন করলে হবে না; স্থানীয় রাজনীতিক ও সাধারণ জনগণকেও এর গুরুত্ব অনুধাবন করতে হবে। যদি তা অনুধাবন না করেন, তবে উন্নয়ন ব্যাহত হবে।

মন্ত্রী আরও বলেন, শুধু অর্থ বরাদ্দ উন্নয়ন নয়, কতটা সুশাসন কায়েম করতে পারছেন, কাউন্সিলররা কতটা এলাকা পরিষ্কার রাখতে পারছেন, জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে পারছেন কি না, তার ওপর উন্নয়ন নির্ভর করছে। সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর, প্রকৌশলীদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। এ ছাড়া চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সব গাড়ি নিবন্ধন করার জন্য নির্দেশনা দেন মন্ত্রী।

নগরের বারইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত ২ দশমিক ৯৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ৬৫ ফুট প্রস্থের খাল খননের জন্য ২০১৪ সালের ২৪ জুন ৩২৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকার একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয় সরকার। কিন্তু এরপর সাড়ে সাত বছরে দুই দফায় সংশোধন ও প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়েও কোনো কাজ হয়নি।

দুই দফা প্রকল্প সংশোধনের পর ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৭৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। সময় নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী বছরের জুন পর্যন্ত। ইতিমধ্যে সরকার সিটি করপোরেশনকে ৯১৪ কোটি টাকা দিয়েছে।