করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় যশোর জেলাকে আগামীকাল সোমবার সকাল ছয়টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ শফিউল আরিফ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানতে চাইলে শফিউল আরিফ আজ বিকেল সাড়ে পাঁচটায় প্রথম আলোকে বলেন, যশোর জেলায় দিন দিন করোনা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। মানুষ সামাজিক দূরত্ব ঠিকমতো মানছে না। সামাজিক দূরত্ব কার্যকর করার জন্য যশোর জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। জেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ সমন্বয় কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, যশোর জেলার প্রবেশদ্বারে তল্লাশিচৌকি বসানো হয়েছে। যাঁরা এ জেলায় প্রবেশ করবেন এবং বের হবেন, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। একই সঙ্গে শহরের মোড়ে মোড়ে তল্লাশিচৌকি বসানো হবে। নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া মানুষ যাতে ঘর থেকে বের না হয়, সে জন্য বাধ্য করা হবে।
রোববার দুপুরে যশোর সার্কিট হাউস মিলনায়তনে জেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ সমন্বয় কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ। উপস্থিত ছিলেন যশোরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা লে. কর্নেল নিয়ামুল হালিম খান, যশোরের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন, সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন, যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক দিলীপ কুমার রায় প্রমুখ।
সভা সূত্রে জানা গেছে, যশোরে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় সম্ভাব্য করণীয় হিসেবে যশোর জেলাকে ‘লকডাউন’ ঘোষণার পক্ষে উপস্থিত অধিকাংশ কর্মকর্তা মত দেন। বিকেলে বিষয়টি মাইকে প্রচার করে মানুষকে জানানো হয়েছে।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জিনোম সেন্টার থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় যশোরে আরও ১৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে গত এক সপ্তাহে যশোরে ২৯ জনের করোনা শনাক্ত হলো। এর মধ্যে ২ জন চিকিৎসকসহ ৯ জন স্বাস্থ্যকর্মী আছেন।
জেলা প্রশাসক জানান, পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত লকডাউন কার্যকর থাকবে। জরুরি সেবা যেমন অ্যাম্বুলেন্স, হাসপাতাল, ওষুধের দোকান, কাঁচাবাজার, নিত্যপণ্যের দোকান, কৃষিসংক্রান্ত বিষয়াদি, যেমন সার, বীজ, কীটনাশকের দোকান, তেল পাম্প ইত্যাদি লকডাউনের আওতামুক্ত থাকবে।