আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর চাঁদার দাবিতে যশোর সদর উপজেলার খাজুরা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল খালেক মোল্লার বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে বিএনপি নেতাদের ইন্ধনে এ হামলা হয় বলে ওই মুক্তিযোদ্ধা অভিযোগ করেন। তবে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা ইন্ধন দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে প্রেসক্লাব যশোরের মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল খালেক মোল্লা এ অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলনে তাঁর পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। গত ৬ আগস্ট হামলার ঘটনায় ১৮ আগস্ট যশোরের আদালতে একটি মামলা করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আবদুল খালেক মোল্লা বলেন, তাঁর বাড়ির জমি নিয়ে খাজুরা গ্রামের আবুল কাশেম, কামাল হোসেনসহ কয়েকজনের সঙ্গে বিরোধ দীর্ঘদিনের। সরকার পতনের দিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে কাশেম, কামালসহ ১০ থেকে ১৫ জন তাঁর বাড়িতে এসে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। তিনি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরদিন ৬ আগস্ট সকালে কামাল, কাশেমসহ ৬০ থেকে ৭০ জন তাঁর বাড়িতে এসে আবার চাঁদা চান। তাঁদের হাতে তখন দা, রডসহ বিভিন্ন অস্ত্র ছিল। তখন তাঁরা স্থানীয় বিএনপি নেতাদের নির্দেশের কথা জানিয়ে সবাইকে লুটপাট শুরু করতে বলেন। পরে তাঁরা কয়েক দলে বিভক্ত হয়ে তাঁর বাড়িতে লুটপাট চালান।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল খালেক বলেন, সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত তাণ্ডব চলে। তিনি বাধা দিতে গেলে তাঁকে চাপাতি দিয়ে কোপাতে আসেন। পরে পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে দেন। হামলাকারীরা দুটি পাকা শৌচাগার, একটি রান্নাঘর ভাঙচুর করে ইট পর্যন্ত খুলে নিয়ে যান। একটি কাঠের ঢালা ভাঙচুর করে ৪০ মণের বেশি শুকনা কাঠ লুট করেন। ঘরে ঢুকে আসবাব ভাঙচুর করে নগদ ৭৫ হাজার টাকা, সোনার চেইন ও এক জোড়া কানের দুল নিয়ে যান। করাত দিয়ে অন্তত ২৫টি মেহগনিগাছ কেটে যান।
আবদুল খালেক মোল্লা অভিযোগ করে বলেন, লুটপাটের সময় তিনি লেবুতলা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মনোয়ারুল ইসলামকে মুঠোফোনে হামলা বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু তিনি অনুরোধ না রেখে ‘ভাঙছে ভাঙুক’ বলেছেন বলে তিনি দাবি করেন।
অভিযোগের বিষয়ে বিএনপি নেতা মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘আমি কী কারণে হামলা করতে বলতে যাব? এসব মিথ্যা, বানোয়াট অভিযোগ। আমি যতটা জানি, খালেক মোল্লার সঙ্গে কাশেম ও কামালদের দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলছে। সেই বিরোধের জেরে কিছু হয়েছে কি না, আমি জানি না। কারণ, আমি তখন ঢাকায় ছিলাম। এক সপ্তাহ পরে ফিরেছি।’
অভিযোগের বিষয়ে খাজুরা গ্রামের আবুল কাশেম ও কামাল হোসেনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করেও তাঁদের পাওয়া যায়নি।