গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলা শহরের রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন স্থান ময়লা-আবর্জনায় ভরে গেছে। কিন্তু এসব অপসারণের কোনো উদ্যোগ নেই। ফলে ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে শহরের বাসিন্দারা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন।
গত শনিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলা শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও পুরোনো কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক–সংলগ্ন ফাঁকা জায়গায় ময়লা-আবর্জনার বিশাল স্তূপ। এর পাশেই রয়েছে টি-স্টল ও খাদ্যসামগ্রী বিক্রির একাধিক দোকান। এর উত্তর-পূর্ব পাশে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা শহরের চৌমাথা থেকে থানা কমপ্লেক্স ও পাবলিক লাইব্রেরির ভেতর দিয়ে নির্মিত সড়কটি সব সময় আবর্জনায় পরিপূর্ণ থাকে। সাদুল্যাপুর বহুমুখী পাইলট মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের দক্ষিণে ও থানার প্রাচীরের শেষ মাথায় সড়ক–সংলগ্ন বিশাল এলাকায় আবর্জনার বড় স্তূপ। কয়েক শ শিক্ষার্থী এই সড়ক দিয়ে নাকে হাত দিয়ে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করে। শহরের চৌমাথা থেকে সরকারি কলেজ সড়কের ওপর ময়লা-আবর্জনা ও নর্দমার নোংরা পানি উপচে পড়ছে। এর মধ্যে এই সড়ক দিয়ে হাজারো মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করছে। সড়কের দুই পাশের দোকানিদেরও তীব্র দুর্গন্ধের মধ্যেই ব্যবসা করতে হচ্ছে।
সাদুল্যাপুর সরকারি কলেজের শিক্ষক মাহমুদুল হক জানান, এসব ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ মানুষ। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কারও কোনো মাথাব্যথা নেই। এনজিও কর্মী সামীয়ুর রহমান বলেন, উপজেলা সদরটি এখনো পৌরসভা হয়নি। এ ছাড়া বাজার ও শহরের দোকানপাট এবং বাসাবাড়ির ময়লা-আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট কোনো স্থান নেই। উপজেলা সদরটি বনগ্রাম ইউনিয়নে পড়েছে। অন্যদিকে সদরে একটি কাঁচাবাজারও আছে। কিন্তু উপজেলা প্রশাসন এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এ উপজেলা শহরে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ বসবাস করে।
সাদুল্যাপুর বণিক সমিতির সভাপতি শফিউল ইসলাম বলেন, শুধু বিভিন্ন এলাকায়ই নয়, শহরের পানিনিষ্কাশনের জন্য যেসব নর্দমা রয়েছে, সেগুলোও ময়লায় ভরে গেছে। এই নর্দমায় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের নোংরা পানি পড়ত। সম্প্রতি ময়লা-আবর্জনায় নর্দমাটি ভরাট হওয়ায় মসজিদের নোংরা পানি স্থানীয় সড়কে উপচে পড়ছে।
সাদুল্যাপুরের ইউএনও রহিমা খাতুন বলেন, ‘উপজেলা শহর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য কিছুদিন বেশ কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা ফেলার জন্য ১৫টি প্লাস্টিকের ড্রাম ও আবর্জনা অপসারণে একটি ভ্যান কিনে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কিছুদিন পর থেকে সেই কমিটি সঠিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করেনি। ফলে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তারপরও বিষয়টি খতিয়ে দেখব।’