উদ্ধার করা দেশীয় প্রজাতির পাখি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে মৌলভীবাজার সদর উপজেলা পরিষদ এলাকায়
উদ্ধার করা দেশীয় প্রজাতির পাখি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে মৌলভীবাজার সদর উপজেলা পরিষদ এলাকায়

মৌলভীবাজারে পাখি শিকার বন্ধে অভিযান

পাখি শিকার বন্ধে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার কনকপুর এলাকাতে প্রশাসনের উদ্যোগে অভিযান চালানো হয়েছে। এ সময় ৪ প্রজাতির ১৬টি পাখি এবং শিকারের খাঁচা ও জাল উদ্ধার করা হয়েছে। পরে পাখিগুলোকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে মুক্ত পরিবেশে।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শরিফুল ইসলাম আজ মঙ্গলবার সকালে এ অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে পাখি ও শিকারের সরঞ্জাম উদ্ধার করা হলেও কোনো শিকারিকে আটক করা সম্ভব হয়নি। অভিযান টের পেয়ে পাখিশিকারিরা সটকে পড়েন।

উদ্ধার করা দেশীয় প্রজাতির পাখি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে মৌলভীবাজার সদর ইউএনওর সরকারি বাসভবনের পুকুরপাড়ে

উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইউএনওর কাছে গোপন মাধ্যমে তথ্য ছিল, কনকপুর এলাকায় কিছু পেশাদার পাখিশিকারি আছেন, যাঁরা পোষা পাখির মাধ্যমে জাল ও টোপ দিয়ে দেশীয় বিভিন্ন জাতের বুনো পাখি শিকার করেন। পরে তা বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দেন। আজ সকালের দিকে ওই এলাকায় অভিযান চালান ইউএনও। এ সময় বিভিন্ন বাড়ি থেকে খাঁচাবন্দী চার জাতের পাখি উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে আছে চারটি ডাহুক, চারটি কানিবক ও একটি গোবক, দুটি শালিক ও পাঁচটি ঘুঘু পাখি। এ সময় সাতটি পাখি রাখার খাঁচা, পাঁচটি শিকারের খাঁচা ও একটি জাল উদ্ধার করা হয়েছে। তবে কোনো পাখিশিকারিকে আটক করা সম্ভব হয়নি।

উদ্ধার করা দেশীয় প্রজাতির পাখি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে মৌলভীবাজার সদর উপজেলা পরিষদ এলাকায়

পরে দুপুরে গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে সদর ইউএনওর সরকারি বাসভবন এলাকার পুকুর ও উন্মুক্ত ঝোপঝাড়ে পাখিগুলোকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, পুকুরপাড়ে ডাহুক পাখি ছাড়া হলে ডাহুকগুলো পাড়ের ঝোপে ছুটে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। অন্য পাখিগুলোর কিছু কিছু ছাড়ার পর সঙ্গে সঙ্গে উড়ে গেছে। কিছু পাখি উড়তে সময় নিয়েছে। দীর্ঘদিন খাঁচাবন্দী থাকার কারণে এদের ওড়ার অভ্যাস নষ্ট হয়ে গেছে।

ইউএনও শরিফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘মৌলভীবাজারে বিভিন্ন প্রজাতির প্রচুর পাখি রয়েছে। কিন্তু এক শ্রেণির অসাধু শিকারি অন্যায়ভাবে ফাঁদ পেতে ও টোপ দিয়ে পোষা শিকারি পাখির মাধ্যমে বুনো পাখি ধরছে। গোপনে এই সংবাদ পেয়ে শিকারিদের কয়েকটি বাড়িতে যাই। গিয়ে জানতে পারি, পেশাদার এই শিকারিরা তাঁদের পোষা বক, পোষা ডাহুক ও অন্যান্য পোষা পাখির মাধ্যমে প্রকৃতি থেকে নির্বিচারে পাখি শিকার করছেন। ফলে প্রকৃতি পাখিশূন্য হয়ে পড়ছে। তার প্রভাব পড়ছে ফসল উৎপাদনে। কীটনাশক ব্যবহার করতে হচ্ছে বেশি। প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। অভিযান চালিয়ে শিকার করা পাখি উদ্ধার করা হয়েছে।’

ইউএনও শরিফুল ইসলাম আরও বলেন, অভিযানকালে স্থানীয় লোকজনকে কাউন্সেলিং করে পাখি শিকারের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে বোঝানো হয়েছে। শিকারিদের প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।