রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান (২৮) হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মোস্তাফিজুরের গ্রামের বাড়ি রাজশাহীর দুর্গাপুরের নওপাড়া গ্রামে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে অংশ নেন গ্রামের কয়েক শ নারী-পুরুষ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি।
নিম্ন আয়ের পরিবারে জন্ম নেওয়া মোস্তাফিজুর রহমান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন ২০১৯ সালে। সে বছরই ঢাকার সাভারের গ্লোরিয়াস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রশাসনিক ও হিসাবরক্ষক কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি পান তিনি। হতদরিদ্র পরিবারে মোস্তাফিজুরই হয়ে উঠেছিলেন একমাত্র ভরসা।
গত শনিবার ভোরে ঢাকার সাভার পৌর এলাকার শিমুলতলায় সিআরপি সড়কে তিনি ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে খুন হন। তাঁকে হারিয়ে তাঁর পরিবার দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় সোমবার সকালে সাভার থানায় মোস্তাফিজুরের বাবা মোজাহার আলী বাদী হয়ে ১০-১২ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেছেন।
ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে এলাকাবাসী জানান, মোস্তাফিজুর অনেক কষ্টে লেখাপড়া শেষ করে চাকরি পেয়েছিলেন। দরিদ্র পরিবারটি তাঁর উপার্জনেই চলত। তাঁর এক বছরের ছেলে রয়েছে। এ অবস্থায় ছিনতাইকারীরা তাঁকে মেরে ফেলল। এখন এই পরিবারের ও ছোট শিশুর কী হবে।
মোস্তাফিজুরের স্ত্রী খাদিজা আক্তার বলেন, ‘আমার সন্তানের এখন কী ভবিষ্যৎ হবে, আমি জানি না। আমাদের অনেক ইচ্ছা ছিল ছেলেকে অর্থকষ্ট ছাড়া মানুষ করব। এখন আমাদের একটিই চাওয়া, হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসি।’ মা ফিরোজা বেগম বলেন, ‘যারা আমার ছেলেরে মেরেছে, তাদের ফাঁসি চাই।’
নওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার জয়নুল আবেদিন বলেন, তাঁরা গ্রামবাসী মিলে পরিবারটির পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাঁরা সবাই চান, এর একটা সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত বিচার হোক। এ ছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে যেন পরিবারটির পাশে দাঁড়ানো হয়, সেটাও তাঁরা চান।
সাভার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাইফুল ইসলাম সোমবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, সকালে নিহত মোস্তাফিজুরের বাবা মোজাহার আলী ১০-১২ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেছেন। আসামিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।