বাগেরহাটের মোংলা সমুদ্রবন্দরের পশুর নদে তেলবাহী জাহাজে (ট্যাংকারে) অগ্নিকাণ্ডে একজনের মৃত্যু হয়েছে। আজ রোববার দুপুরে মোংলা বন্দর এলাকার পশুর নদে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আরও একজন অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম লাল মিয়া (৫২)। তিনি এমটি সি লিংক উৎসব নামের ওই জাহাজের ইঞ্জিনচালক ছিলেন। তিনি ঢাকার পোস্তগোলা ব্যাংক কলোনির মো. শরীফ হোসেনের ছেলে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ওই জাহাজের অপর ইঞ্জিনচালক মো. ইয়াছিন পাটোয়ারী (৫০)। তাঁর বাড়ি ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলায়।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, মেঘনা পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের তেলবাহী ওই জাহাজ চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে এসেছিল। জাহাজটিতে ১৯ লাখ লিটার জ্বালানি তেল ছিল। খুলনার দৌলতপুরে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের মেঘনা ডিপোতে ওই তেল খালাসের কথা ছিল।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার শেখ ফখর উদ্দিন বলেন, রোববার দুপুরে মোংলা বন্দর এলাকার পশুর নদে এমটি সি লিংক উৎসব নামের ওই তেলবাহী জাহাজে নোঙর করার সময় ইঞ্জিনের কক্ষে আগুন লেগে যায়। অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে দ্রুত বন্দরের একটি উদ্ধার দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে জাহাজটিকে নিরাপদে সরিয়ে নেয় এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে।
পরে মোংলা ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু। প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুনে দুই ইঞ্জিনচালক দগ্ধ হয়। দগ্ধ শ্রমিকদের উদ্ধার করে প্রথমে মোংলা বন্দর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পথে ইঞ্জিনচালক লাল মিয়া মারা যান। আহত অপর ইঞ্জিনচালক ইয়াছিন পাটোয়ারীকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার শেখ ফখর উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের সৌভাগ্য আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়েছে। আগুন ইঞ্জিনরুমের বাইরে যায়নি। তেলে আগুন ছড়িয়ে পড়লে কী ধরনের বিপদ হতো, তা ধারণার বাইরে। অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে কাজ শুরু হয়েছে।’
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসা কর্মকর্তা জুলেখা আক্তার বলেন, ‘রোববার বেলা সোয়া তিনটার দিকে বাগেরহাটের মোংলা বন্দর হাসপাতাল থেকে দুজন অগ্নিদগ্ধ রোগীকে চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তাঁদের মধ্যে লাল মিয়া পথেই মারা গেছেন। তাঁকে আমরা মৃত অবস্থায় পেয়েছি। অগ্নিদগ্ধ আরেকজন ইয়াছিনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি করে নেওয়া হয়েছে। ইয়াছিনের শরীরের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে।’