মেয়ে না হয়ে ছেলে হওয়ায় পুকুরে ফেলে মারলেন বাবা

আদালত
প্রতীকী ছবি

তিনটি ছেলের পর প্রত্যাশা করেছিলেন মেয়েসন্তানের। কিন্তু চতুর্থ সন্তানটিও ছেলে হয়। এ নিয়ে অসন্তুষ্টি এবং সন্তানের জন্মকে কেন্দ্র করে ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে ছেলেকে পুকুরে ফেলে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন এক বাবা। তাঁর নাম হামিদুল হক। তিনি রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার দিলালপুর বানিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। গতকাল মঙ্গলবার রংপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. জাহাঙ্গীর আলম ওই জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন।

সুইম বাবু নামের ওই শিশু হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বদরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাদ্দাম হোসেন। তিনি বলেন, হামিদুল স্বর্ণের দোকানে কাজ করেন। চতুর্থ সন্তান ছেলে হলে তিনি স্ত্রী ফরিদা পারভীনের ওপর রুষ্ট হন। এমনিতে সংসারে আর্থিক টানাপোড়েন ছিল, তার ওপর সন্তানের জন্মের সময় দুই দফায় বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) থেকে হামিদুল ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ঋণ নেন। প্রতি সপ্তাহে ঋণের কিস্তি দিতে হয় সাড়ে তিন হাজার টাকা। সব মিলিয়ে চতুর্থ ছেলেকে হত্যার পরিকল্পনা করেন হামিদুল। গত রোববার রাতে তিনি ছেলেকে পুকুরে ফেলে দেন। স্ত্রী যখন তাঁকে ফোন করে ছোট ছেলেকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান, তখন তিনি বাড়ি ফিরে অন্যদের সঙ্গে মিলে সন্তানতে খুঁজতে থাকেন। পরের দিন সোমবার শিশুর লাশ ওই পুকুরের পানিতে ভেসে ওঠে। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করে।

বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, সন্দেহ হওয়ায় শিশুর বাবা ও মাকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একপর্যায়ে হামিদুল সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। মঙ্গলবার শিশু সুইম বাবুকে হত্যার অভিযোগে বদরগঞ্জ থানায় মামলা হয়।

নিহত সুইমের মা ফরিদা পারভীন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ওই রাতে সুইম বাবুকে ঘরে রেখে অন্য ঘরে থাকা সন্তানদের খোঁজ নিতে গিয়েছিলেন তিনি। পরে এসে দেখেন সুইম নেই। বাবা হয়ে নিজের সন্তানকে কেউ হত্যা করতে পারে, এটা তিনি এখনো মেনে নিতে পারছেন না।