শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়

মুক্ত আলোচনায় শিক্ষার্থীবান্ধব উপাচার্য নিয়োগসহ নানা দাবি শিক্ষার্থীদের

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বর
ফাইল ছবি

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিকে সামনে রেখে মুক্ত আলোচনা করেছেন শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে এ আলোচনা হয়।

সভায় শিক্ষার্থীরা শিক্ষার্থীবান্ধব উপাচার্য চাওয়ার পাশাপাশি প্রক্টর, ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা বদলি করার পক্ষে মতামত দেন। উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার দায়িত্ব পালনের জন্য সহ–উপাচার্য নিয়োগসহ বিভিন্ন মতামত দেন শিক্ষার্থীরা।

সভায় শিক্ষার্থীরা জানান, আরও দুদিন এমন মুক্ত আলোচনার মাধ্যমে সবার মতামত নিয়ে ৩০ অথবা ৩১ জানুয়ারি শিক্ষামন্ত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আমন্ত্রণ জানানো হবে। এ সময় আলোচনায় উঠে আসা বিষয়গুলো তাঁর কাছে উত্থাপন করা হবে। শিক্ষামন্ত্রীর কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামোগত পরিবর্তনের জন্য আবেদন করা হবে।

আলোচনায় শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। আলোচনায় শিক্ষার্থীরা বলেন, নতুন উপাচার্য শিক্ষার্থীবান্ধব না হলে শুধু নাম পরিবর্তন হবে, কিন্তু শিক্ষার্থীদের সমস্যা থেকে যাবে। মাসিক কিংবা ত্রৈমাসিক মুক্ত আলোচনা আয়োজন করার মতামত দেন শিক্ষার্থীরা। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সমস্যাগুলো আলোচনা করে সমাধানের পথ বের করা যাবে বলেও মন্তব্য করেন শিক্ষার্থীরা।

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন (শাকসু), বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে পুলিশ ফাঁড়ি সরানোর ব্যাপারে দাবি জানানো হবে। এ ছাড়া সারা বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খোলা রাখাসহ অ্যাকাডেমিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। আলোচনায় উপাচার্যের পদত্যাগ দাবির আন্দোলনে অনশনকারী শিক্ষার্থীরা ছাড়াও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন ব্যবস্থা উন্নত করা, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সময়সীমা বৃদ্ধি, সপ্তাহে সাত দিন খোলা রাখার দাবি তুলে ধরেন।

অনশনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আবেদীন বলেন, ‘প্রাথমিক পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে। বিষয়গুলো আলোচনার পর আরও গুছিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আমরা প্রস্তাব আকারে তুলে ধরব।’

১৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়টির বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অসদাচরণসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে তাঁর পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ ছাত্রী। একপর্যায়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ হামলা চালায়। পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা এবং তাঁদের লক্ষ্য করে শটগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। পরে ওই আন্দোলন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে রূপ নেয়।

প্রথম ৬ দিনে দাবি পূরণ না হওয়ায় ১৯ জানুয়ারি বেলা ৩টা থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আমরণ অনশনে বসেন ২৪ শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে শুরু করা আমরণ অনশন ১৬৩ ঘণ্টা পর বুধবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক ও লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবাল শিক্ষার্থীদের পানি পান করিয়ে ভাঙান।