একে অপরের বিরুদ্ধে হত্যার হুমকির অভিযোগ এনেছিলেন। করেছিলেন থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি)। এ নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হয়। বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন জনপ্রতিনিধিরা। ঘটনার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মিলে গেলেন তাঁরা। বললেন, এটা ভুল-বোঝাবুঝি ছিল। তাঁরা হলেন কুষ্টিয়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহিন উদ্দীন ও ১৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মীর রেজাউল ইসলাম ওরফে বাবু।
গতকাল শনিবার দিবাগত রাত আটটার দিকে পৌরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের জুগিয়া এলাকার একটি কবরস্থান চত্বরে সমঝোতা বৈঠক হয়। জেলা পরিষদ প্রশাসক রবিউল ইসলামসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত বুধবার বিকেলে কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি জিডি করেছিলেন প্যানেল মেয়র শাহিন উদ্দীন। তিনি জিডিতে উল্লেখ করেছিলেন, ‘তোকে খুন করে জেল খাটব, তুই কত বড় নেতা হয়েছিস, তা আমি দেখে নেব’ বলে তাঁকে হত্যার হুমকি দেন কাউন্সিলর রেজাউল ইসলাম। এ নিয়ে প্রথম আলো অনলাইনে ‘তুই কত বড় নেতা হয়েছিস, দেখে নেব বলে কাউন্সিলরের হুমকি’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ ঘটনার পর সন্ধ্যায় একই ধরনের অভিযোগ এনে প্যানেল মেয়র শাহিন উদ্দীনের বিরুদ্ধে কাউন্সিলর রেজাউল ইসলাম থানায় জিডি করেন।
সমঝোতা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নাইমুল ইসলাম খান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, দুই কাউন্সিলরের মধ্যকার ঘটনা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর তোলপাড় সৃষ্টি হয়। বিষয়টি নিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন জনপ্রতিনিধি ও অন্য কাউন্সিলররা। গতকাল সন্ধ্যায় শাহিনের এলাকা জুগিয়ার একটি কবরস্থান চত্বরে এ নিয়ে বৈঠক হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদ প্রশাসক রবিউল ইসলাম, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি তাইজাল আলী খানসহ আরও কয়েক নেতা। সেখানে প্যানেল মেয়র শাহিন ও রেজাউল উপস্থিত ছিলেন।
নাইমুল ইসলাম খান বলেন, বৈঠকে জেলা পরিষদ প্রশাসক রবিউল ইসলাম দুই কাউন্সিলকে সতর্ক করে বলেন, জনপ্রতিনিধিদের আচরণ সুন্দর হতে হবে। নিজেদের মধ্যে এ ধরনের ঘটনা সবার জন্য বিব্রতকর। ভুল-বোঝাবুঝি থেকে এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সেটা মনে রাখতে হবে। পরে একে অন্যকে জড়িয়ে ধরেন দুই কাউন্সিলর।
এ বিষয়ে জেলা পরিষদ প্রশাসক রবিউল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, শাহিন ও বাবুর মধ্যে যে ঘটনা ঘটেছিল, সেটা বসে ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। দুজনের মধ্যে কোনো রাগ-অভিমান নেই।
প্যানেল মেয়র শাহিন উদ্দিন বলেন, ‘নেতাদের নির্দেশে আমার এলাকায় বসে বিষয়টি সমাধান হয়েছে। আমার আর কারও প্রতি কোনো অভিযোগ নেই। আমরা মিলেমিশে কাজ করতে চাই।’ কাউন্সিলর মীর রেজাউল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে এমনটি হয়েছিল। এখন আর কোনো মান-অভিমান নেই। আমরা এক হয়ে গেছি।’