মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল শুক্রবার এক তরুণী (১৮) মারা গেছেন। আজ শনিবার সকালে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আরশ্বাদ উল্লাহ এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার সকালে জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ঢাকার ধামরাই উপজেলার একটি গ্রামের ওই তরুণীকে মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন স্বজনেরা। এ সময় জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁর শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে তাঁকে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। এ দিন দুপুরে করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিষয়টি নিশ্চিত হতে তাঁর শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরপর পরীক্ষার জন্য নমুনা ঢাকার সাভারে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়। তবে অবস্থার অবনতি হলে গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিকে ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।
এ পর্যন্ত জেলা সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ৯ জন পুরুষ, ৩ জন নারী, ১ তরুণী ও ১ কিশোর। এ ছাড়া কোভিড–১৯–এ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তিনজন। তাঁদের মধ্যে সিঙ্গাইর উপজেলার দুই পুরুষ এবং হরিরামপুর উপজেলার এক নারী রয়েছেন।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আরশ্বাদ উল্লাহ বলেন, আজ সকালে তরুণীর লাশ পরিবারের লোকজন বাড়িতে নিয়ে গেছেন। নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদন দুপুর পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। এ কারণে ওই তরুণী কোভিড–১৯–এ আক্রান্ত কি না, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এদিকে জেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটি সূত্রে জানা গেছে, মানিকগঞ্জে এ পর্যন্ত ৩ হাজার ১১১ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ২৮৭ জনের শনাক্ত হয়েছে। ৪৯ জন সুস্থ হয়েছেন। আক্রান্তের মধ্যে মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতাল এবং সাটুরিয়া ও ঘিওর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আইসোলেশনে ২০ জন চিকিৎসাধীন। বাকিরা নিজ বাসায় আইসোলেশনে রয়েছেন।
জেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব ও সিভিল সার্জন আনোয়ারুল আমিন আখন্দ বলেন, ঈদের সময় থেকে রাস্তাঘাট, হাটবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে মানুষের অবাধ চলাচল বেড়ে গেছে। অনেকে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে না চলায় মানিকগঞ্জে সংক্রমণের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। সংক্রমণের বিস্তার ঠেকাতে তিনি জনসাধারণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন।