মানবপাচার রোধে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র কাজ করবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার। তিন দিনের সফর শেষে আজ বুধবার বেলা পৌনে ১১টায় সিলেটের বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
এর আগে রবার্ট মিলার সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
পাচার থেকে বেঁচে যাওয়া মানুষের বিভিন্ন সহায়তা পাওয়ার সুযোগ বাড়ানো যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার বলে রবার্ট মিলার মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘পাচারকারীরা যে মুনাফার লোভে অসহায় লোকদের শোষণ করে যাচ্ছে, তার সুযোগ বানচাল করে দিতে করণীয় বিষয়গুলো নিয়ে আমি ও বিভাগীয় কমিশনার আলোচনা করেছি। এর মধ্যে ফৌজদারি আদালতে পাচারকারীদের বিচারসহ বিভিন্ন বিষয় উঠে এসেছে।’
সিলেটের বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে মতবিনিময়ের আগে সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলামের সঙ্গে সকালে মতবিনিময় হয়েছে বলে রবার্ট মিলার জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, সিলেট অঞ্চলে মানবপাচারবিরোধী কার্যক্রম এবং অবৈধ ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের গৃহীত পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বক্তৃতায় বলেন, ‘ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল নতুন নতুন প্রযুক্তি, পরিবেশ ও নিরাপত্তাগত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। এমন একটি সময়ে কোম্পানিগুলোর জন্য উন্মুক্ত বিনিয়োগ, ন্যায্য প্রতিযোগিতার টেকসই পরিবেশ নিশ্চিত করা, যেসব নীতি ও মূল্যবোধ বাংলাদেশের লক্ষণীয় প্রবৃদ্ধিকে সম্ভব করেছে সেগুলোকে জোরদার করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশকে একত্রে কাজ করতে হবে। এটি ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের আওতায় বাংলাদেশ ও বাংলাদেশি জনগণের প্রতি আমাদের অঙ্গীকার।’
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত রাতারগুল পরিদর্শনের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে রবার্ট মিলার বলেন, ‘আমি নৌকায় চড়ে এলাকাটিতে বেড়িয়েছি এবং জলাভূমির বনটির দারুণ উদ্ভিদ ও প্রাণীবৈচিত্র্য দেখেছি। রাতারগুলের মতো বাস্তুসংস্থানগুলো সংরক্ষণ করা খুবই জরুরি। রাতারগুলের মতো বিভিন্ন সংরক্ষিত প্রজাতির আবাসস্থল মানুষকে বন্যার হাত থেকে রক্ষা করে।’ সিলেটে দেখার ও করার মতো অনেক কিছুই আছে—উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমার এবারের আসার অন্যতম কারণ ছিল শেভরন করপোরেশনের বিবিয়ানা গ্যাস প্ল্যান্ট পরিদর্শন করা।’
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘শেভরনের মতো আমেরিকান কোম্পানিগুলো কেবল যে বাংলাদেশের জ্বালানি খাতেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তা নয়, এ দেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতিতে একটি বড় নিয়োগকারী হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। শেভরন স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সহায়তা করার জন্য কাজ করছে। বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে প্রতিষ্ঠানটি যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে, এ সফরে তা দেখার সুযোগ পেয়েছি।’