আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলার সাক্ষীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি যশোর জেলা শাখা। সোমবার দুপুরে সংগঠনটির পক্ষ থেকে যশোর প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে এই দাবি জানানো হয়। এর আগে যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খানের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েও একই দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি হারুণ অর রশীদ বলেন, ২০১৭ সালে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার প্রেমচারা গ্রামের আমজাদ হোসেন মোল্যার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা হয়। শুরু থেকেই ওই মামলার সাক্ষী ও তাঁদের স্বজনদের ওপর হামলা-মামলা ও হয়রানি করা হচ্ছে। অনতিবিলম্বে আমজাদের সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। মামলার সাক্ষীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। না হলে আগামীতে সাক্ষীদের পক্ষে মামলার সাক্ষ্য প্রদান করা সম্ভব হবে না। এতে যুদ্ধাপরাধের ওই মামলার সুষ্ঠু বিচার বাধাগ্রস্ত হবে।
হারুণ অর রশীদ অভিযোগ করেন, আমজাদ ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে আওয়ামী লীগ–সমর্থিত স্থানীয় এক সাংসদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। আমজাদের পুত্রবধূ ওই সাংসদের ঢাকার ন্যাম ফ্লাটে গিয়ে মিষ্টিমুখ করিয়েছেন। এ ছাড়া আমজাদের সভাপতিত্বে ২০১৭ সালে বাঘারপাড়ায় অনুষ্ঠিত বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় ওই সাংসদ। যে কারণে আমজাদের সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদ রহমান, নূরুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা আফজাল হোসেন, সৈয়দ আবুল কালাম শামছুদ্দীন, প্রণব দাস, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলার সাক্ষী খলিলুর রহমান ওরফে খোকন বিশ্বাস, ইছাহাক মোল্যা, আবদুল হক, আলাউদ্দীন বিশ্বাস, এহিয়ার রহমান, রতন বিশ্বাস, বি এম রুহুল আমিন প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে, আমজাদ গ্রেপ্তার হওয়ার ১৫ দিন আগে প্রথমে সাক্ষী এহিয়ার রহমানের দোকানে হামলা করে ভাঙচুর করা হয়। অপর এক সাক্ষী ইছাহাক মোল্যার নাতি নিজাম মোল্যাকে মারপিট করে জখম করা হয়। তারপর একের পর এক হামলা-মামলার ঘটনা ঘটেছে। এমনকি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক খাঁনের গাড়িবহরেও হামলা করে সন্ত্রাসীবাহিনী। এ ছাড়া যশোরে আদালত চত্বরে সাক্ষীর ওপর হামলা করা হয়। একাধিকবার বিভিন্ন সাক্ষীর ফলদ বাগান কেটে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য আমজাদ হোসেন মোল্লার ছেলে খোকনের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। বারবারই তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছেন।