হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় আজ রোববার একটি তেলবাহী ট্রেনের চারটি ট্যাংকার লাইনচ্যুত হয়েছে। এ ঘটনার পর ট্যাংকারগুলো থেকে গড়িয়ে পড়া জ্বালানি তেল সংগ্রহ করে নিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয় ব্যক্তিরা। আজ দুপুর ১২টার দিকে শাহজীবাজার রেলস্টেশনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে সিলেটের সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। রেলওয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই পথে রেল চলাচল স্বাভাবিক হতে আরও ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা সময় লেগে যেতে পারে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, দুপুর ১২টায় তেলবাহী ট্যাংকার লাইনচ্যুত হওয়ার পর থেকে জ্বালানি তেল মাটিতে পড়ে ভেসে যাচ্ছে। স্থানীয় শত শত মানুষ হাড়ি, পাতিল, বালতি, মগ ও জগ নিয়ে দুর্ঘটনাস্থলে এসে জ্বালানি তেল সংগ্রহ করে নিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে চলছে তেল নেওয়ার প্রতিযোগিতা।
ট্রেনের তেলবাহী ট্যাংকার উদ্ধারের কাজে নিয়োজিত শেখ মো. হাসান জানান, তেলবাহী ট্যাংকারে প্রচুর পরিমাণ ডিজেল মজুত ছিল। ট্যাংকার উল্টে যাওয়ায় তেল মাটিতে ভেসে যাচ্ছে। এ সুযোগে আশপাশের শত শত নারী–পুরুষ তেল সংগ্রহ করছেন। তাঁদের কারণে কাজ দ্রত শেষ করা যাচ্ছে না।
তেল সংগ্রহকারী কাছন মিয়া ও রাহেলা বেগম বলেন, ‘ট্রেন থেকে পড়ে জ্বালানি তেল নষ্ট হচ্ছে। আমরা এ তেল নিলে তো ক্ষতি নেই।’
এ বিষয়ে শায়েস্তাগঞ্জ রেলস্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার মুশফিক উদ্দিন বলেন, প্রতি ট্যাংকারে ১০ হাজার লিটার ডিজেল ছিল। সে হিসাবে চারটি ট্যাংকারে ৪০ হাজার লিটার ডিজেল ছিল। দুর্ঘটনার পর যে যেভাবে পারছে, এ তেল নিয়ে যাচ্ছে।
শাহজিবাজার রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. মোয়াজ্জেল হক বিকেল চারটায় প্রথম আলোকে বলেন, বগিগুলো উদ্ধারের কাজ চলছে। তবে এ রুটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হতে আরও ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা সময় লাগবে।
শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, আজ দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রাম থেকে সিলেটগামী একটি তেলবাহী ট্রেন শাহজীবাজার রেলস্টেশনের কাছে পৌঁছালে ট্রেনের ইঞ্জিন ও টারটি ট্যাংকার লাইনচ্যুত হয়। এতে দুপুর ১২টার পর থেকে ঢাকা-সিলেট ও চট্টগ্রাম রেলপথে ট্রেন চলাচল বন্ধ আছে। এ দুর্ঘটনার কারণে সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেন শ্রীমঙ্গল রেলস্টেশন এবং ঢাকাগামী জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ভানুগাছ রেলস্টেশনে আটকা পড়েছে। এ ছাড়া এ কারণে ঢাকা থেকে সিলেটগামী আন্তনগর ট্রেন কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে আজ ছেড়ে যায়নি। বেলা তিনটায় সিলেটের উদ্দেশে ট্রেনটি ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। আজ বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত এই রেলপথে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়নি। এতে তিনটি ট্রেনের শত শত যাত্রী দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
জয়ন্ত্রিকা এক্সপ্রেসে ঢাকাগামী যাত্রী সিলেটের ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম বলেন, পাঁচ ঘণ্টা ধরে ট্রেনে বসা। আজ সন্ধ্যায় ঢাকায় চিকিৎসক দেখানোর কথা ছিল তাঁর। কখন ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হবে, তা নিশ্চিত করে রেলের লোকজন তাঁকে জানাতে পারেননি।