মাগুরায় আদালতের রায়

মাদক রাখার দায়ে মাসে দুইবার করে চালাতে হবে মাদকবিরোধী প্রচার

প্রতীকী ছবি

মাদক সংরক্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হলেও এক আসামিকে কারাগারে যেতে হচ্ছে না। এর বদলে এক বছর প্রতি মাসে দুবার ব্যানার–প্ল্যাকার্ডসহ মাদকবিরোধী প্রচারণা চালাতে হবে। পাশাপাশি পরিবারের সঙ্গে থেকে গাছ লাগানোসহ আদালতের দেওয়া সাতটি শর্ত মেনে চলতে হবে।

আজ বৃহস্পতিবার প্রবেশনের ব্যতিক্রমী এই রায় দেন মাগুরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াউর রহমান। প্রবেশন পাওয়া ওই ব্যক্তির নাম বিথুন মোল্লা (২৪)। এর আগে চলতি বছরে মাগুরার তিনটি আদালতে মাদকের তিনটি ও পারিবারিক বিরোধের একটি মামলায় অনুরূপ রায় দেওয়া হয়।

আদালত ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর আসামি বিথুন মোল্লাকে পারনান্দুয়ালী মোল্লাপাড়া থেকে ২০টি ইয়াবা বড়িসহ আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ওই দিনই তাঁর নামে মাগুরা সদর থানায় ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে পুলিশ। ওই মামলায় এত দিন জামিনে ছিলেন বিথুন।

মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অজেদা সিদ্দিকী জানান, বিথুন মোল্লার ২০টি ইয়াবা বড়ি সংরক্ষণের অভিযোগ আদালতে প্রমাণিত হয়েছে। দোষী সাব্যস্ত বিথুনকে ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৯ (১) টেবিলের ৯ (ক) ও ১৯ (৪) ধারার অপরাধের শাস্তির পরিবর্তে প্রবেশন কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে শর্ত সাপেক্ষে এক বছরের প্রবেশন মঞ্জুর করেছেন আদালত। শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে কোনো রূপ অপরাধে না জড়ানো, মাদক সেবন না করা, প্রতি মাসে দুবার ব্যানার বা প্ল্যাকার্ডসহ স্থানীয় বাজারে অথবা কলেজের সামনে মাদকবিরোধী প্রচার চালানো ও পরিবেশের প্রতি দায়িত্বশীল হিসেবে পাঁচটি বনজ ও ফলদ গাছ রোপণ।

আইনজীবী অজেদা সিদ্দিকী জানান, এসব শর্ত ভঙ্গ করলে বা আচরণ সন্তোষজনক না হলে আসামির প্রবেশন আদেশ বাতিল হবে ও অপরাধের নির্ধারিত দণ্ডাদেশ ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড এবং এক হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে।

মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবী হাসান সিরাজ বলেন, আসামি বয়সে তরুণ। তাঁর আগের কোনো অপরাধের রেকর্ড নেই। এই বয়সে তাঁর কারাদণ্ড হলে পুরোদস্তুর আসামিদের সংস্পর্শে এসে তাঁরও বড় অপরাধী হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। আদালতের এই রায়ে আসামি নিজেকে সংশোধন করে নেওয়ার সুযোগ পাবেন।

মাগুরা সমাজসেবা কার্যালয়ের প্রবেশন কর্মকর্তা মেহেতাজ আরা জানান, মামলায় প্রবেশন পাওয়া ব্যক্তিকে পর্যবেক্ষণের আওতায় রাখা হয়। দুই মাস পরপর অগ্রগতি ও শর্ত পালনের বিষয়টি আদালতে প্রতিবেদন দেওয়া হয়। তিনি জানান, এর আগে চলতি বছরের গত ২ মার্চ পারিবারিক বিরোধের একটি মামলায় একজনকে ও ১৭ সেপ্টেম্বর মাদকের মামলায় একজনকে অনুরূপ প্রবেশন দেন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াউর রহমান। এর মধ্যে প্রবেশনকালে আচরণ সন্তোষজনক হওয়ায় পারিবারিক বিরোধের মামলায় প্রবেশন পাওয়া যুবককে মেয়াদ শেষের আগেই গত ১ নভেম্বর মামলা থেকে খালাস দিয়েছেন আদালত।