ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায় একটি সংযোগ সেতুর নিচের মাটি সরে গেছে। ফলে সেতুতে ওঠার মুখে দুই পাশের পিচঢালাই ভেঙে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ঝুঁকি নিয়ে যান চলাচল করছে। দুই বছর আগে এক কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়।
ভলাকুট ইউনিয়নের কান্দি গ্রামে এ সেতুর অবস্থান। সেতুটির সামনের অংশের সংস্কারের জন্য গত জুলাই মাসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত আবেদন করেন গ্রামবাসী।
উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে বিশ্ব ব্যাংকের উন্নয়নমূলক গ্রামীণ সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের (ইমপ্রুভমেন্টাল রুরাল রোড ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট–আইআরআরডিপি) অর্থায়নে উপজেলা সদরের নাসিরপুর থেকে সরাইল উপজেলার অরুয়াইল পর্যন্ত প্রায় ৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে কাজ শুরু হয়। এ প্রকল্পের আওতায় দুটি সেতুও নির্মাণ করা হয়, যার একটি হলো কান্দি সেতু। প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে এই সেতুর নির্মাণকাজ ২০১৮ সালে শেষ হয়।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলা সদর ইউনিয়নের নাসিরপুর গ্রাম ও ভলাকুট ইউনিয়নের মধ্যে এই সংযোগ সড়ক। নাসিরপুর গ্রাম থেকে ভলাকুট ইউনিয়নে যেতে কান্দি গ্রামে সেতুটির দুপাশের মাটি ও ইট সরে গেছে। সেতুর গোড়ায় গর্ত হওয়ায় ছোট আকারের দুটি যান পাশাপাশি চলাচল করতে পারে না। সেখানে ইজিবাইক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করছে। সেখান থেকে এগিয়ে সামনে গেলে সেতুর অপর প্রান্তে ভলাকুটমুখী পশ্চিম দিকের সেতুর সংযোগে বাম পাশের অংশেও মাটি সরে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিনই গর্তের আকার বড় হচ্ছে। মাসখানেক ধরে এ সমস্যা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় কৃষক আলম মিয়া বলেন, বাধ্য হয়ে তাঁদের কৃষিপণ্য বিক্রির জন্য ১০ কিলোমিটার ঘুরে উপজেলা সদরে নিয়ে যেতে হচ্ছে। এতে পণ্য পরিবহনে দ্বিগুণ ভাড়াও গুনতে হচ্ছে।
অটোরিকশাচালক রফিক মিয়া বলেন, ‘টাকানগর, ভলাকুট ও কান্দি গ্রামের সবাই এই রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালান। মানুষ মালামাল নিয়ে এলে এই রাস্তা দিয়ে নিয়ে যেতে পারি না। যাত্রী নিয়ে গাড়িও চালাতে পারি না। ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ এই সেতু ব্যবহার করে। সেতুর রাস্তার দুই পাশই ভেঙে গেছে।’
ভলাকুট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রুবেল মিয়া জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে সেতুর গর্ত সংস্কারের জন্য আবেদন করা হয়েছে।
উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. ইছাক মিয়া জানান, অতিবৃষ্টির কারণে সেতুর নিচের মাটি সরে যাওয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। খুব দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমা আশরাফী বলেন, কান্দি গ্রামের লোকজন সেতু ও সংযোগ সড়ক সংস্কারের দাবিতে একটি লিখিত আবেদন দিয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা প্রকৌশলীকে ইতিমধ্যে বলা হয়েছে।