মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে কাবু হয়ে পড়েছে দেশের সর্ব উত্তরের জেলার পঞ্চগড়ের জনজীবন। চলতি শীত মৌসুমে প্রথমবারের মতো এই এলাকার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। কুয়াশার পরিমাণ কমে গেলেও, ঝিরঝিরে হিমেল বাতাসের কারণে অনুভূত হচ্ছে হাড়কাঁপানো শীত।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সকাল ৯টায় জেলার তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল সকাল সূর্যের মুখ দেখা গেলেও, উত্তরের হিমেল বাতাসের দাপটে বেলা ১টা পর্যন্ত ছড়াতে পারেনি রোদের তীব্রতা। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
স্থানীয় ব্যক্তিরা বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে বাড়তে থাকে উত্তরের হিমশীতল বাতাস। কমতে থাকে কুয়াশার দাপট। রাতভর ঝিরঝিরে হিমেল বাতাসে কাবু হয়ে পড়ে ওই জনপদের মানুষ। শৈত্যপ্রবাহ মৃদু থেকে নেমে আসে মাঝারিতে। কনকনে শীতে প্রায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।
শুক্রবার সকালে পঞ্চগড় শহরের ভ্যানচালক মকছেদুল ইসলাম বলেন, ‘কাল (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যা থেকে যে বাতাস শুরু হয়েছে, তাতে বেশিক্ষণ বাইরে থাকা যায়নি। ঠান্ডায় সারা রাত হাত-পা গরম হয়নি। আজ সকালে রোদ উঠেছে, কিন্তু ঠান্ডা কমেনি।’
জেলা শহরের আবদুর রহমান নামের একজন সবজি বিক্রেতা বলেন, আজ কুয়াশা নেই। কিন্তু বাতাসটা মনে হচ্ছে বরফমাখা। পরনের কাপড়গুলো বাইরে ঠান্ডা হয়ে থাকছে। ঠান্ডা বাতাসে কান-মাথা ব্যথা করছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র জানায়, দেশে ২ ডিগ্রি থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করলে বলা হয় অতি শৈত্যপ্রবাহ। ৪ ডিগ্রি থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা থাকলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ আর ৬ ডিগ্রি থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করলে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। আর ৮ ডিগ্রি থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে তাপমাত্রা বিরাজ করলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে তেঁতুলিয়ার আকাশে মেঘ ও কুয়াশার পরিমাণ কমে যাওয়ায় হিমালয়ের ভারী শীতল বাতাস সরাসরি এই জনপদে প্রবেশ করছে। ফলে তাপমাত্রা কমে গেছে। বর্তমানে তেঁতুলিয়ায় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৫ থেকে ১৮ কিলোমিটার।
আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ রায় বলেন, চলতি শীত মৌসুমে তেঁতুলিয়ায় এটাই প্রথম মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। তেঁতুলিয়ায় এই মাঝারি ও মৃদু শৈত্যপ্রবাহ আরও তিন থেকে চার দিন অব্যাহত থাকতে পারে।