ঘুমন্ত মাকে অচেতন করে কোল থেকে শিশুকন্যাকে চুরি করে নিয়ে পুকুরের পানিতে ফেলে দিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল রোববার রাত ১০টার দিকে দিনাজপুর জেলার বোচাগঞ্জ উপজেলার নাফানগর ইউনিয়নের ডহুরা মেম্বারপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শিশুটির লাশ আজ সোমবার সকালে বাড়ির পাশের একটি পুকুর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
গ্রামবাসীরা জানান, ওই গ্রামের কৃষক সোহেল রানার (৪০) দ্বিতীয় স্ত্রী মাশতারা বেগম (১৯) প্রতিদিনের মতো রাতের খাবার খেয়ে আড়াই মাস বয়সী একমাত্র শিশুকন্যা সুমাইয়া আক্তারকে নিয়ে তাঁর শয়নকক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন। এ সময় সোহেল রানা বাড়ির বাইরে ছিলেন। বাড়ির অন্য সদস্যরা নিজ নিজ ঘরে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। রাত ১০টার দিকে কয়েকজন অজ্ঞাতনামা লোক মাশতারা বেগমের ঘরে ঢুকে তাঁর পরনের ওড়না দিয়ে তাঁর মুখে পেঁচিয়ে ধরে অচেতন করে ওই শিশুটিকে নিয়ে পালিয়ে যায়।
আজ সকালে বাড়ির পাশের একটি কচুরিপানায় ঢাকা পুকুর থেকে শিশুটির ভাসমান লাশ উদ্ধার করে পুলিশ ও এলাকাবাসী।
অনেকক্ষণ ঘরে শিশুর কান্না না শুনে বাড়ির সদস্যরা রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই ঘরে গিয়ে দেখেন, মাশতারা অচেতন হয়ে বিছানায় পড়ে আছেন এবং তাঁর পাশে শিশুকন্যা নেই। তাঁরা পানি ছিটিয়ে মাশতারার জ্ঞান ফেরান। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ঘটনা শোনার পর সবার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন। খবর পেয়ে শিশুর বাবা সোহেল রানাও বাড়িতে আসেন। সবাই মিলে বাড়ির চারদিকে শিশুটিকে খুঁজতে থাকেন। পরে আজ সকালে বাড়ির পাশের একটি কচুরিপানায় ঢাকা পুকুর থেকে শিশুটির ভাসমান লাশ উদ্ধার করে পুলিশ ও এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে আজ সন্ধ্যায় বোচাগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা পাঁচজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। বোচাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুল হাসান বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য শিশু সুমাইয়া আক্তারের লাশ দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় তাঁর বাবা সোহেল রানা, দাদা মো. জামাল ও দাদি রিনা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে।