মনিরামপুরের পাঁচ ভোটকেন্দ্র পানিবন্দী

মশিয়াহাটি ডিগ্রি কলেজের মাঠে হাঁটুপানি। এই কলেজটি একটি ভোটকেন্দ্র। বুধবার সকালে
প্রথম আলো

তৃতীয় ধাপে ২৮ নভেম্বর যশোরের মনিরামপুর উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এদিন মোট ১৫২টি ভোটকেন্দ্রে ভোট নেওয়া হবে। এর মধ্যে কুলটিয়া ইউপির ৯টি কেন্দ্রের মধ্যে পাঁচটি কেন্দ্রই পানিবন্দী রয়েছে। ফলে এসব কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের কোনো পরিবেশ নেই।

ভবদহ স্লুইসগেট দিয়ে পানি নিষ্কাশিত না হওয়ায় গত ১৮, ১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বরের টানা বৃষ্টিতে ভবদহের বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে যায়। এতে মনিরামপুর উপজেলার অন্তত ৫০টি গ্রামে পানি ঢুকে পড়ে। বৃষ্টির পানিতে এসব গ্রামের বেশির ভাগ এলাকা প্লাবিত হয়। বৃষ্টি থামার পর আস্তে আস্তে পানি নামতে শুরু করে। তবে এখনো অনেক বাড়িঘর, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে পানি রয়ে গেছে। জলাবদ্ধ হয়ে আছে এ ইউনিয়নের পাঁচটি ভোটকেন্দ্র।

মনিরামপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুর রশিদ বলেন, কুলটিয়া ইউনিয়নের পাঁচটি ভোটকেন্দ্রে পানি রয়েছে। কেন্দ্রগুলো ভোট গ্রহণের উপযোগী করা হচ্ছে। তিনি দাবি করেন, কেন্দ্রগুলোতে ভোট গ্রহণে অসুবিধা হবে না।

আজ বুধবার সরেজমিনে দেখা গেছে, হাটগাছা-সুজাতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে হাঁটুপানি। একহাঁটু পানি ভেঙে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করছেন বিদ্যালয়টির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এই কেন্দ্রে বাজেকুলটিয়া ও হাটগাছা  গ্রামের ১ হাজার ৮৬ জন ভোটার রয়েছেন।

ভবদহ স্লুইসগেট দিয়ে পানি নিষ্কাশিত না হওয়ায় গত ১৮, ১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বরের টানা বৃষ্টিতে ভবদহের বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে যায়। এতে মনিরামপুর উপজেলার অন্তত ৫০টি গ্রামে পানি ঢুকে পড়ে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লাকী মজুমদার বলেন, মাঠে হাঁটুপানি। জল ভেঙে বিদ্যালয়ে আসতে হয়। তবে বিদ্যালয়ের কক্ষগুলো শুকনা আছে।

ইউনিয়নের পদ্মনাথপুর সরকারি প্রাথমিক ও সংলগ্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের মাঠে হাঁটুপানি জমে আছে। এলাকার কিছু লোক পদ্মনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে বালু ফেলার পর তার ওপর বালুভর্তি বস্তা ফেলে কেন্দ্রে প্রবেশের রাস্তা তৈরি করেছেন। তবে সংলগ্ন পদ্মনাথপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে ও শ্রেণিকক্ষে হাঁটুপানি রয়েছে। কেন্দ্রে ঢোকার কোনো পরিবেশ নেই। এই ভোটকেন্দ্রে আড়শিংগাড়ি, পোড়াডাঙা ও পদ্মনাথপুর গ্রামের ১ হাজার ৫৬৩ জন ভোটার রয়েছেন।

হাটগাছা-সুজাতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে জমে আছে পানি। বুধবার সকালে

পদ্মনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহানারা খাতুন বলেন, ‘বিদ্যালয়ের সামনে হাঁটুপানি ছিল। এলাকার কিছু মানুষ প্রায় এক সপ্তাহ ধরে প্রথমে বালু এবং পরে বালুভর্তি বস্তা পানির মধ্যে ফেলে বিদ্যালয়ে প্রবেশের রাস্তা তৈরি করেছেন। বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আমরাও তাঁদের কিছুটা সহায়তা করেছি।’

লখাইডাঙা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে পানি রয়েছে। এলাকাবাসী ছয়-সাত দিন ধরে মাঠের দুই পাশে দুটি সেচযন্ত্র বসিয়ে পানি সেচে পাশের বিলে ফেলছেন। মাঠে এখনো কিছুটা পানি জমে আছে। মাঠের পাশ দিয়ে কিছুটা ঘুরে তবেই বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে হচ্ছে। এই ভোটকেন্দ্রে কুলটিয়া ও লখাইডাঙা গ্রামের ১ হাজার ৯০৩ জন ভোটার রয়েছেন।

লখাইডাঙা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রতিমা রানী রায় বলেন, বিদ্যালয়টি ভোটকেন্দ্র। বিদ্যালয়ের মাঠে অনেক জল ছিল। শ্যালো মেশিন দিয়ে সেচে জল সরানো হয়েছে। এখনো মাঠে কিছুটা জল জমে আছে।
ইউনিয়নের মশিয়াহাটি ডিগ্রি কলেজের মাঠেও হাঁটুপানি। কলেজের সামনে পানিতে তিনটি ডিঙিনৌকা ভাসছে। এ কেন্দ্রের অধীনে সুজাতপুর গ্রামের ১ হাজার ৪২৫ জন ভোটার রয়েছেন।

আলীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে সম্প্রতি হাঁটুপানি নেমে গেলেও একপাশে এখনো পানি জমে রয়েছে। এই কেন্দ্রে আলীপুর ও গাবরডাঙ্গা গ্রামের ১ হাজার ৬৮৭ জন ভোটার রয়েছেন।