দিনের তুলনায় রাতে ক্রেতা সমাগম বেশি হচ্ছে। ১৫ রমজান থেকে এ ভিড় হচ্ছে। চলবে চাঁদরাত পর্যন্ত।
ঠাকুরগাঁও শহরের নর্থ সার্কুলার সড়কে মানুষ আর যানবাহনের ভিড়। অথচ রাত তখন সাড়ে ১১টা। ঈদ সামনে রেখে এখন মধ্যরাত পর্যন্ত কেনাকাটায় ব্যস্ত মানুষ। শহরের ছোটখাটো দোকান থেকে শুরু করে অভিজাত বিপণিকেন্দ্রগুলোয় চলছে কেনাকাটার উৎসব। দোকানিরা বেচাকেনা শেষ করে দোকানেই সাহ্রি খেয়ে বাড়ি ফিরছেন।
বিক্রেতারা বলেন, ঈদ কড়া নাড়ছে দরজায়। আর মাত্র কয়েকটি দিনের অপেক্ষা। ঈদের কেনাকাটা প্রায় শেষ করে এনেছেন অনেকেই। হাতে সময় কম। তার ওপর দিনে থাকে কাজের ব্যস্ততা। অনেকে আবার রোজা রেখে দিনে ঘোরাঘুরি পছন্দ করেন না। তাই অনেক ক্রেতা ইফতার সেরে সন্ধ্যার পর বেরিয়ে পড়েন কেনাকাটায়।
ঠাকুরগাঁও শহরের কেনাকাটার অন্যতম প্রিয় জায়গা নর্থ সার্কুলার সড়কের পৌর মার্কেট, মৌচাক মার্কেট, হাওলাদার মার্কেট, টাউন প্লাজা ও শাহজালাল শপিং মল। এবার ঈদ উৎসব রাঙাতে দোকানিরা শাড়ি, থ্রি–পিসসহ এনেছেন বাহারি সব পোশাক। গত সোমবার থেকে গত বুধবার রাত পর্যন্ত এসব মার্কেটে অনেক মানুষের ভিড় চোখে পড়ে। টাউন প্লাজার বেবি হাউসের মালিক মাহবুব সরকার বলেন, দিনের তুলনায় রাতে ক্রেতা সমাগম বেশি হচ্ছে। ১৫ রমজান থেকেই ক্রেতাদের এ ভিড়। চলবে চাঁদরাত পর্যন্ত।
নর্থ সার্কুলার সড়কের সন্তোষ ক্লথ স্টোরের মালিক সন্তোষ আগরওয়ালা বলেন, এ বছর ঈদের বাজারে দেশি সুতি থ্রি-পিসের সঙ্গে ইন্ডিয়ান অরগেনজা, মেঘা, চন্দ্রিয়া, জয়পুরি ও পাকিস্তানি সারারা-গারারা বেশি বিক্রি হচ্ছে। থ্রি–পিসে মেয়েদের পছন্দের তালিকায় আরও রয়েছে পুষ্পা, কাঁচা বাদাম, কাতান, কারচুপি, বালাহার, মটকার থ্রি–পিস।
শহরের হলপাড়া মহল্লার বাসিন্দা ফেরদৌস আরা বলেন, ‘করোনার কারণে দুই বছর ঈদে কেনাকাটায় প্রশান্তি ছিল না। এবার সুযোগ পেয়ে সময় নিয়ে কেনাকাটা করছি।’
পৌর মার্কেটের শহীদ মোহাম্মদ আলী সড়কের একটি পোশাকের শোরুমে স্বামী আরফিন রহমানকে সঙ্গে নিয়ে ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছিলেন ঘোষপাড়া মহল্লার সাবিনা ইয়াসমিন। তিনি বলেন, ‘দিনের বেলায় প্রচণ্ড গরম থাকে। সারা দিন রোজা রাখায় শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তাই ইফতারের পর একটু বিশ্রাম নিয়ে রাতে কেনাকাটা করতে চলে এসেছি।’
পৌর মার্কেটের ময়ূরী ফ্যাশনের মালিক লুৎফর রহমান বলেন, সন্ধ্যার পর ঈদের বাজার বেশি জমে। সারা দিন তাঁর দোকানে যা কেনাবেচা হয়, সন্ধ্যার পর তার চেয়ে বেশি হয়। প্রতিদিন রাত একটা পর্যন্ত এই মার্কেটে কেনাবেচা চলে। বেশির ভাগ দিন তাঁরা দোকানে সাহ্রি খেয়ে বাড়ির দিকে রওনা হন।
পৌর মার্কেটের শতরূপা ফ্যাশনে স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে কেনাকাটা করতে আসেন ক্লাবপাড়া মহল্লার বাসিন্দা ফরহাদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘দিনের বেলায় ক্রেতাদের প্রচণ্ড ভিড় থাকে। এ কারণে কাপড় বেছে নেওয়া যায় না। রাতে মানুষ কিছুটা কম থাকে বলে অনেক সময় নিয়ে কাপড় পছন্দ করা যায়। তাই রাতেই কেনাকাটা করতে এসেছি। ঈদের কাছাকাছি সময়ে কেনাকাটায় দিন-রাতের কোনো পার্থক্য নেই।’