নেত্রকোনার মদন উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় হাফিজুল হক চৌধুরী (৩৪) নামের এক শিক্ষানবিশ আইনজীবী নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার বেলা দুইটার দিকে উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের ছালাকান্দা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত হাফিজুল হক চৌধুরী একই গ্রামের এমদাদুল হক চৌধুরীর ছেলে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ছালাকান্দা গ্রামের এমদাদুল হক চৌধুরীর সঙ্গে প্রতিবেশী সাবেক ইউপি সদস্য ফারুক মিয়ার দীর্ঘদিনের বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। আদালতে অন্তত পাঁচটি মামলা চলমান আছে। আজ বেলা দুইটার দিকে ফারুক মিয়ার বাড়ির সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন হাফিজুল হক। এ সময় হাফিজুলকে একা পেয়ে প্রতিপক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আকস্মিকভাবে তাঁর ওপর হামলা চালান। পরে স্থানীয় লোকজন হাফিজুরকে উদ্ধার করে মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ দিকে হাফিজুলের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নিহত হাফিজুলের চাচা তৌহিদ চৌধুরী বলেন, হাফিজুল ঢাকার একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে এলএলবি সম্পন্ন করেন। পরে এক আইনজীবীর অধীনে শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করছিলেন। সনদ পেতে দেরি হওয়ায় তিনি সম্প্রতি গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন। আজ ফারুক মিয়ার বাড়ির সামনে যেতেই তাঁদের লোকজন হাফিজুলকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেছেন। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে জানার জন্য ফারুক মিয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) এ কে এম রিফাত সাঈদ বলেন, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই হাফিজুল হক চৌধুরী মারা যান। তাঁর শরীরে ধারালো অস্ত্রের একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
আজ সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফেরদৌস আলম বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের আটক করতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।