মদনপুর চরের ১৫০ পরিবারে ঈদের খুশি

স্বাস্থ্যবিধি মেনে মদনপুর আলোর পাঠশালার মাঠে শিক্ষার্থীদের হাতে ঈদ উপহারসামগ্রী তুলে দেন বন্ধুসভার সদস্যরা। আজ মঙ্গলবার ভোলার দৌলতখান উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নে
ছবি: প্রথম আলো

মেঘনা নদীর মাঝে জেগে ওঠা ইউনিয়নের নাম মদনপুর। গত মার্চে লবণাক্ত পানি উঠে চরের প্রধান ফসল সয়াবিনসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হয়। এর ওপর ‘লকডাউন’, ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান। সব মিলিয়ে চরের মানুষ যেন বিধ্বস্ত।

ভোলার দৌলতখান উপজেলার মদনপুর চরের এসব মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে প্রথম আলো ট্রাস্ট। মদনপুর আলোর পাঠশালার ১৫০ শিক্ষার্থীর পরিবারের জন্য ঈদ উপহারসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। সামিট গ্রুপের সহযোগিতায় আজ মঙ্গলবার এই উপহারসামগ্রী পেয়ে হাসি ফুটেছে চরের ১৫০ পরিবারে।

মঙ্গলবার সারা দিন আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ছিল। থেকে থেকে ঝড়-বৃষ্টি, বাতাস ছিল। ভোলার প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্য ও মদনপুর আলোর পাঠশালার শিক্ষকেরা ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে উত্তাল মেঘনা পাড়ি দিয়ে চরে পৌঁছান। পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে শুকনা অবস্থায় ত্রাণের বস্তা পৌঁছে দিয়েছেন গরিব-অসহায় শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকের হাতে। শিক্ষার্থীদের হাতে জীবাণুনাশক দিয়ে, মুখে মাস্ক লাগিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ত্রাণের প্যাকেট তুলে দেন বন্ধুসভার সদস্যরা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন মদনপুর আলোর পাঠশালার প্রধান শিক্ষক আক্তার হোসেন, সহপ্রধান সাইফুল ইসলাম, সহকারী শিক্ষক আক্তার হোসেন, আলআমিন, আজগর হোসেন, প্রথম আলোর ভোলা প্রতিনিধি মো. নেয়ামতউল্যাহ, ভোলা বন্ধুসভার সহসভাপতি এম হেলাল উদ্দিন, হারুন অর রশিদ, সদস্য নাছিরউদ্দিন শুভ, মো. শিমুল প্রমুখ।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে মদনপুর আলোর পাঠশালার মাঠে শিক্ষার্থীদের হাতে ঈদ উপহারসামগ্রী তুলে দেন বন্ধুসভার সদস্যরা। আজ মঙ্গলবার ভোলার দৌলতখান উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নে

মদনপুর গ্রামের মোফাজ্জল হক মাতব্বর বলেন, তাঁর ১ একর ৬০ শতাংশের সয়াবিন লবণাক্ত পানিতে পুড়ে গেছে। মাত্র সাড়ে ৩ মণ সয়াবিন পেয়েছেন। যেভাবে ফল বের হয়েছিল, তাতে ৪৫ মণ ফসল হওয়ার কথা ছিল। এক মণ সয়াবিনের দাম ১ হাজার ৫০০ টাকা। এ সয়াবিন বিক্রি করে তাঁর সারা বছর চলার কথা। সেখানে এখন না খেয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে। প্রথম আলো ট্রাস্ট এর আগেও সহায়তা দিয়েছে। এখন যে চাল, চিনি, তেল, আলু, ডাল, সাবান দিয়েছে; তাতে ঈদ কিছুটা ভালো কাটবে।

চরমুন্সির ইমাম হোসেন মাঝি (৪১) একইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন লবণাক্ত পানিতে। তার ওপর ঘরে থাকা ২০ কেজি চাল ও ছেলেমেয়ের কাপড় ঘর থেকে চুরি হয়ে গেছে। ইমাম হোসেন বলেন, এ অবস্থায় না খেয়ে, আধপেটা খেয়ে দিন কাটাচ্ছিলেন। স্কুলের শিক্ষকেরা তাঁর দুই মেয়েকে যা দিয়েছেন, তাতে ঈদটা হয়তো ভালো কাটবে।