ভোলায় প্রচারণার শেষ মুহূর্তে কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ, ভাঙচুর

ভোলা পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ। গতকাল শুক্রবার রাতে
ছবি: সংগৃহীত

ভোলা পৌরসভা নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণার শেষে এসে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে এ ঘটনায় সব মিলিয়ে ১৫ জন আহত হয়েছেন। ভাঙচুর হয়েছে নির্বাচনী কার্যালয়, দোকান, বোরাক-রিকশা ও মোটরসাইকেল।

পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আবদুর রব (উটপাখি) এবং বর্তমান কাউন্সিলর ও কাউন্সিলর প্রার্থী ওমর ফারুকের (ডালিম) মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া ৫ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী এফরানুর রহমান ও মিজানুর রহমানের সমর্থকদের মধ্যে সহিংতার ঘটনা ঘটে।

আবদুর রব ভোলা পৌরসভা বিএনপির সভাপতি এবং চারবারের সাবেক কাউন্সিলর। ওমর ফারুক আওয়ামী লীগ নেতা ও বর্তমান কাউন্সিলর। নির্বাচন উপলক্ষে দুই পক্ষই আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থী মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের সমর্থক।

দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় ভাঙচুর হওয়া ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীর কার্যালয়

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মেয়র প্রার্থী মনিরুজ্জামান প্রচার-প্রচারণার শেষ দিনে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে গণসংযোগে বের হন। আধিপত্য বিস্তার, দল ভারী, কে মেয়র প্রার্থীর নিকটতম হবে, তা নিয়ে আবদুর রব এবং ওমর ফারুকের সমর্থকের মধ্যে সন্ধ্যার আগে এক দফা পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। রাত আটটার দিকে পুনরায় সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক আকারে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় দোকান, গাড়ি ও নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে পুলিশ, কোস্টগার্ড ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

সংঘর্ষের পর সরেজমিনে দেখা যায়, পৌরসভার ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দোকানপাট সব বন্ধ। আট–নয়টি বাজারের মানুষ আগেই ঘরে উঠে গেছে। এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আবদুর রব (উটপাখি) এবং ওমর ফারুকের (ডালিম) নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙা। রাস্তার ওপর ভাঙা চেয়ার-টেবিল, ইট-পাথর পড়ে আছে। শহরের ব্যস্ততম এলাকা ওয়েস্টার্নপাড়ায় কোনো রিকশা নেই।
আবদুর রব বলেন, কোনো রকম সহিংসতা ছাড়াই তিনি প্রচার–প্রচারণা চালিয়ে আসছিলেন। কিন্তু প্রচার-প্রচারণা বন্ধের কয়েক ঘণ্টা আগে ওমর ফারুক তাঁর সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে তাঁর নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা চালান। তাঁর সাতজন কর্মীকে জখম করেছেন। একজনের অবস্থা খারাপ, তাঁকে বরিশাল পাঠানো হয়েছে।

সংঘর্ষে আহত একজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে।

ওমর ফারুক বলেন, ‘আমরা নৌকার মিছিল করছিলাম। ওরা ভুয়া ভুয়া বলে স্লোগান দেয়। এ কারণে আমার লোকজন কিছুটা ক্ষিপ্ত হয়।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কালিখোলা নামক স্থানে কাউন্সিলর প্রার্থী এফরানুর রহমান ও মিজানুর রহমানের সমর্থকদের মধ্যে সহিংতার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় একটি নির্বাচনী কার্যালয় ও অটোরিকশা ভাঙচুর হয়েছে। এখানেও চারজন আহত হয়েছেন। স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, ৪ নম্বর ওয়ার্ড, ১ নম্বর ওয়ার্ড, ৮ নম্বর ওয়ার্ডে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

কাউন্সিলর প্রার্থী মিজানুর রহমান বলেন, বর্তমান কাউন্সিলর ও কাউন্সিলর প্রার্থী এফরানুর রহমান বিশাল মিছিল নিয়ে এসে তাঁর নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর করেছেন। তিনি বাপ্তা ইউনিয়নের বহিরাগত লোকজনকে নিয়ে এসে এলাকায় মিছিল-মিটিং করেছেন।
কাউন্সিলর প্রার্থী এফরানুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসী নির্বাচনী সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট ও তাঁর ক্লিন ইমেজ ক্ষুণ্ন করার জন্য গুজব ছড়াচ্ছে।

ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনায়েত হোসেন বলেন, পরিস্থিতি শান্ত আছে। কেউ অভিযোগ করেননি।