ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে ভোলায় আজ বৃহস্পতিবারও বিপৎসীমার ২৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবাহিত হয়েছে। এতে ভোলার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের দুই লাখ পরিবার জোয়ারের পানিতে বন্দী হয়ে পড়েছে।
আজ সকাল থেকে ভোলার আকাশ ছিল মেঘাচ্ছন্ন। বাতাসের গতিবেগ আগের থেকে কমে গেছে। দুপুর পর্যন্ত মাঝেমধ্যে রোদ উঠতে দেখা গেছে।
দুপুরে সরেজমিনে ভোলা সদর উপজেলার তুলাতুলি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাইরে ঘর, বাড়ি, ফসলি জমি জোয়ারে ডুবে গেছে। লোকজন বাঁধের ওপর নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজ সেরে নিচ্ছেন। জোয়ারের পানির ধাক্কায় ঘরবাড়ির মেঝে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেছে। সেখানকার মানুষেরা পানিতে হেঁটে কাজ করছেন। কাচিয়া মাঝের চরে ও দৌলতখান উপজেলার মদনপুর ইউনিয়ন জোয়ারের পানিতে ডুবে আছে ঘরবাড়ির উঠান। মানুষজনের উঠান, গোয়ালঘর ডুবে গেছে। গাছপালা ডুবে গেছে। খেতের ফসলও ডুবে গেছে। মানুষ পানির মধ্যে হেঁটে হেঁটে তাঁদের জরুরি কাজ সারছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভোলা সদর উপজেলার রামদাসপুর, কাচিয়া মাঝের চর, চর চটকিমারা, ভেলুমিয়া, ভেদুরিয়া, চর হোসেন, গাজীরচর, ভোলার চর, দৌলতখান উপজেলার মদনপুর, হাজীপুর, নেয়ামতপুর, তজুমদ্দিন উপজেলার চর জহির উদ্দিন, চর মমতাজ, মোজাম্মেল, ভাসনভাঙারচর, মনপুরা উপজেলার কলাতলি, চরনিজাম, চরফ্যাশন উপজেলার চর কুকরিমুকরি, মুজিবনগর, ঢালচর, লালমোহন উপজেলার কচুয়াখালী, শাহাজালালসহ প্রায় অর্ধশতাধিক চরাঞ্চলে দুপুরের জোয়ারে জমির ওপরে দু-তিন হাত পানি উঠেছে। এ ছাড়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাইরে বাঁধ ছুঁই ছুঁই পানি উঠেছে। এসব চরের প্রায় দুই লাখ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
ঢালচরের চেয়ারম্যান আবদুস সালাম হাওলাদার বলেন, জোয়ারের পানির ঢেউয়ে ইউনিয়নে ভাঙন বৃদ্ধি পেয়েছে। ইউনিয়নের তিন শতাধিক মাছের পুকুর ডুবে গেছে। দুই হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এতে দিনের চেয়ে রাতে মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান মাহমুদ বলেন, বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটার দিকে জোয়ারের পানির উচ্চতা ছিল মেঘনা নদীতে ৩ দশমিক ৫ মিটার। তেঁতুলিয়া নদীতে জোয়ারে পানির উচ্চতা ছিল ২ দশমিক ৭৮ মিটার—যা বিপৎসীমা থেকে ২৪ সেন্টিমিটার ওপরে। তবে বুধবার জোয়ারের উচ্চতা আরও বেশি ছিল।