প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় মেয়র ও তিনটি ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর পদে ভোট গ্রহণই হয়নি। বাকি ছয়টি ওয়ার্ডের দুটিতে বর্তমান কাউন্সিলর ছাড়া অন্য সব প্রার্থী ভোটের আগেই ঘোষণা দিয়ে মাঠ ছেড়েছেন। এসব নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার তারাব পৌরসভা নির্বাচনে আজ শনিবার ভোট গ্রহণ হলেও হাতেগোনা অধিকাংশ কেন্দ্রেই ভোটার উপস্থিতি অনেক কম ছিল।
প্রতীক বরাদ্দের পর পুরো সময় প্রচারণার মাঠে থাকলেও শেষ মুহূর্তে এসে গতকাল শুক্রবার রাতে ঘোষণা দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেনের প্রতিদ্বন্দ্বী রুহুল আমিন। তার আগে গত বৃহস্পতিবার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর বি এম আতিকের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী আমজাদ হোসেনও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে টিকে থাকা যায়নি উল্লেখ করে আমজাদ হোসেন বলেন, ‘আমার ওপর দিয়ে অনেক ঝড়ঝাপটা বয়ে গেছে। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।’
পারিপার্শ্বিক বাস্তবতা ও সংগঠনের সিদ্ধান্ত মেনে নির্বাচন থেকে সরিয়ে নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী রুহুল আমিন। তিনি বলেন, ‘এ পর্যন্ত আমার অন্তত শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। নেতা-কর্মীদের হুমকিধমকি ও মারধর কোনোভাবেই থামছিল না। সংগঠনের সিদ্ধান্ত মেনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছি।’
গতকাল সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে রুহুল আমিন লিখেন, স্থানীয় সাংসদ বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর নির্দেশেই নিজেকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে নিচ্ছেন তিনি।
এদিকে আজ দিনভর শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই ভোট গ্রহণ হয়েছে। ২,৩, ৫ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কেন্দ্রগুলোতে দিনের শুরু থেকেই ভোটার উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। এ সময় কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে কেন্দ্রগুলোর বাইরে সচেতনতামূলক ব্যানার টাঙানো ছাড়া তেমন কোনো কার্যক্রম দেখা যায়নি।
সকাল সাড়ে নয়টায় ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তারাব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে ভোটারদের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। সামাজিক দূরত্ব না মেনেই দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন ভোটাররা। মাস্কহীন ছিলেন অনেক ভোটার। ভোটকেন্দ্রের ভেতরে একসঙ্গে একজনের বেশি ভোটার প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা এবং ভোটকক্ষে প্রবেশের সময় ভোটারদের হাতে জীবাণুনাশক দেওয়ার কথা থাকলেও কোনো কক্ষেই সে নিয়ম মানা হয়নি।
বেলা সাড়ে ১১টায় ওয়াজেদ আলী মেমোরিয়াল হাইস্কুল কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মঞ্জুরুল আহসান বলেন, তাঁর কেন্দ্রের ২ হাজার ২৬২ জন ভোটারের মধ্যে প্রথম সাড়ে ৩ ঘণ্টায় ৩০ ভাগ ভোটার ভোট দিয়েছেন। স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে বলেন, ভোটারদের বলেও দূরত্ব রক্ষা করা যাচ্ছে না। পর্যাপ্ত লোকবল না থাকায় ভোটারদের হাতে জীবাণুনাশকও দেওয়া যাচ্ছে না।
তবে দুপুরে ১ নম্বর ওয়ার্ডের গন্ধর্বপুর বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের রূপসী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নোয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রগুলোতে কোনো ভোটার চোখে পড়েনি।
গন্ধর্বপুর বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন বলেন, তাঁর কেন্দ্রে ২ হাজার ২৪ জন ভোটারের মধ্যে বেলা ২টা পর্যন্ত ১৪ ভাগ ভোটাররা ভোট দিয়েছেন। তার মতে সংরক্ষিত কাউন্সিলর ছাড়া ওয়ার্ডগুলোতে অন্য কোনো প্রার্থী না থাকায় ভোটাররা ভোট দিতে আসেননি।
শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ হয়েছে উল্লেখ করে নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে প্রশাসন সর্বোচ্চ সতর্ক ছিল।