পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নে বেসরকারিভাবে ঘোষিত ফলে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন নৌকার প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন।
পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নে দীর্ঘ ১৮ বছর পর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো গতকাল রোববার। দীর্ঘদিন পর নির্বাচনকে ঘিরে ইউনিয়নজুড়ে উৎসবের আমেজ ছিল নবীন-প্রবীণ ভোটারদের মধ্যে।
দীর্ঘ ১৮ বছর পর অনুষ্ঠিত হওয়া নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে গতকাল ৪ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। বেসরকারিভাবে ঘোষিত ফল অনুযায়ী, জয় পেয়েছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন। গতকাল উপজেলার শুধু বলরামপুরেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
সকাল আটটায় শুরু হওয়া ভোট গ্রহণ বিরতিহীনভাবে চলে বিকেল চারটা পর্যন্ত। দুপুরে বলরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের বেশ কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ভোটাররা দীর্ঘ সারিতে দাঁড়িয়ে তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন। প্রতিটি কেন্দ্রেই পুরুষ ভোটারের চেয়ে নারী ভোটারের উপস্থিতি ছিল বেশি। তরুণ ভোটারদের মধ্যেও বেশ উৎসাহ দেখা যায়।
দুপুরে ভাতিজি নিরু রানীর কোলে করে বলরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের কেন্দ্রে ভোট দিতে আসেন শতবর্ষী যমুনা রানী। নিজে হাঁটতে না পারলেও দীর্ঘদিন পর ভোট দিতে পেরে তিনি ছিলেন খুশি। এই কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা নবীন ভোটার মাধবী রানী বলেন, তাঁর যখন তিন বছর বয়স ছিল তখন এই ইউনিয়নে সর্বশেষ নির্বাচন হয়। ২০১৯ সালে তিনি ভোটার হন। এবারই প্রথমবারের মতো ভোট দিলেন।
৪ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার গলিম উদ্দিন বলেন, ২০০৩ সালের নির্বাচনের পর বোদা পৌরসভার সঙ্গে এই ইউনিয়নের সীমানাজটিলতা দেখা দেয়। এটিকে কেন্দ্রে করে এরপর আর নির্বাচন হয়নি। তাঁদের ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ২০১৩ সালে সরকারি চাকরি পেয়ে পদত্যাগ করেন। এরপর আর ভোট না হওয়ায় ওয়ার্ডটি সদস্যশূন্য ছিল। দীর্ঘদিন পর এই ওয়ার্ডে জনপ্রতিনিধি পাওয়া যাবে।
বলরামপুর উচ্চবিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন বলেন, এই ইউনিয়নে দীর্ঘদিন পর ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ায় ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ দেখা গেছে। সকাল থেকেই ভোটাররা সারিতে দাঁড়িয়ে সুশৃঙ্খলভাবে ভোট দেন। সকালের দিকে পুরুষদের চেয়ে নারীদের উপস্থিতি বেশি ছিল।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জানা গেছে, ইউনিয়নের কিছু অংশ নিয়ে ২০০৩ সালের পর বোদা পৌরসভা গঠিত হয়। এর পর থেকে সীমানাজটিলতা তৈরি হয় এবং ভোট গ্রহণে আদালতের নিষেধাজ্ঞা ছিল। সে সমস্যা সমাধানের পর ২০১৮ সালের ১৩ অক্টোবর নির্বাচন দিতে আর কোনো বাধা নেই মর্মে গেজেট প্রকাশিত হয়।