নোয়াখালীর ভাসানচরে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা কেমন আছে, তা পর্যবেক্ষণ করে গেলেন ১০ দেশের কূটনীতিকেরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারযোগে তাঁরা ভাসানচরে পৌঁছান। এ সময় তাঁদের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদলও উপস্থিত ছিল। কূটনীতিকেরা ভাসানচরের বিভিন্ন দেশের সরকারের ও বিভিন্ন সংস্থার উন্নয়ন প্রকল্পগুলো ঘুরে দেখেন।
ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের তত্ত্বাবধানে থাকা শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বেলা ১১টায় কূটনীতিকদের বহনকারী বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারটি ভাসানচরের হেলিপ্যাডে অবতরণ করে। রাষ্ট্রদূতদের মধ্যে ছিলেন কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকলস, ইউরোপীয় ইউনিয়নের অ্যাম্বাসাডর অ্যান্ড হেড অব ডেলিগেশন চার্লেস হোয়াইটলি, জার্মানির রাষ্ট্রদূত এচিম থ্রস্টার, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডেলিগেট অ্যাফেয়ার্স হেলেন লাফেভ, কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জাং ক্যাং, ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত এলান এল ডেনিগা, নরওয়ের রাষ্ট্রদূত এস্পেন রিক্টার, সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ড্রা বার্গ ভন লিন্ডি, ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত উইনিন এস্ট্রার্প পিটারসন ও ইতালির রাষ্ট্রদূত এনরিকো নানজিয়াটা। তাঁদের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আট সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ছিল।
শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কর্মকর্তা গোবিন্দ চাকমা আজ বিকেলে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ১০টি দেশের কূটনীতিক ভাসানচরে পৌঁছার পর বিভিন্ন ক্লাস্টারে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন। তাঁরা এ সময় রোহিঙ্গাদের সঙ্গে এখানকার সুযোগ-সুবিধা, জীবনযাত্রার মানসহ সার্বিক বিষয়ে খোঁজখবর নেন। এ ছাড়া ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য গৃহীত সরকারি, বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার উন্নয়ন কার্যক্রম ঘুরে দেখেন। পরিদর্শন শেষে রাষ্ট্রদূতদের প্রতিনিধিদলটি বিকেল চারটার দিকে ভাসানচর ত্যাগ করেন।
২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আসে প্রায় আট লাখ রোহিঙ্গা। তাদের সবাই কক্সবাজার জেলায় অস্থায়ী আশ্রয়শিবিরে বসবাস করছে। এর আগেও আরও কয়েক লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনে দেশ ছেড়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কক্সবাজারের বিভিন্ন আশ্রয়শিবিরে রোহিঙ্গাদের চাপ সামলাতে সরকার এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেয়। ইতিমধ্যে ভাসানচরে ২২ হাজার ৬০৪ রোহিঙ্গাকে স্থানান্তর করা হয়েছে।