ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ঝাড়গ্রাম জেলা থেকে বাংলাদেশে ফিরেছেন পটুয়াখালী থেকে নিখোঁজ হওয়া রাজিয়া বেগম (৩৫)। বর্তমানে তিনি পটুয়াখালী সদর উপজেলার দক্ষিণ লোহালিয়া গ্রামে নিজ বাড়িতে আছেন।
এর আগে গত শুক্রবার বিকেলে চাচাতো ভাই তরিকুল ইসলাম বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে রাজিয়াকে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। গতকাল শনিবার সকালে রাজিয়া নিজ বাড়িতে পৌঁছান। প্রায় দুই বছর পর রাজিয়াকে দেখে মা–বাবাসহ স্বজনেরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
দুই বছর আগে রাজিয়া বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ঝাড়গ্রাম জেলা শহর থেকে আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রাজিয়া বিবাহিত এবং তাঁর এক ছেলে আছে। স্বামীর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হওয়ার পর থেকে রাজিয়া বাবার বাড়িতে থাকতেন।
গতকাল দক্ষিণ লোহালিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, রাজিয়াকে দেখতে বাড়িতে প্রতিবেশীরা ভিড় করেছেন। ঘরের বারান্দায় শুয়ে আছেন রাজিয়া। বাবা লতিফ হাওলাদার ও মা হাসিনা বেগম রাজিয়ার পাশে বসে উৎসুক মানুষের সঙ্গে কথা বলছেন।
রাজিয়া কীভাবে ভারতে পৌঁছান, সে প্রশ্নের উত্তরে শুধু তাকিয়ে ছিলেন। পরে তাঁর মা হাসিনা বেগম বলেন, প্রায় ১০ বছর আগে রাজিয়া কিছুটা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। মাঝেমধ্যে বাড়ি থেকে অন্যত্র চলে যেতেন। কয়েক দফায় রাজশাহী, মাগুরা ও সিলেট চলে গিয়েছিলেন। দুই বছর আগে রাজিয়া নিখোঁজ হন। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তরিকুলের কাছে জানতে পারেন, রাজিয়া ভারতে আছেন।
রাজিয়ার চাচাতো ভাই তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘লোহালিয়া গ্রামবাসী’ নামে একটি ফেসবুক আইডি আছে। গত বছরের ১১ ডিসেম্বর সেখানে রাজিয়ার ছবি দেখতে পান। পরে আইডিতে থাকা মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ করে জানতে পারেন রাজিয়া ভারতে আছেন।
তরিকুল বলেন, পশ্চিমবঙ্গের হ্যাম রেডিও নামে একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে তাদের সদস্য আদনানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তখন রাজিয়ার ছবি দিয়ে খোঁজখবর নেওয়া হয়। অবশেষে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় রাজিয়া দেশে আসেন।
রাজিয়ার মা হাসিনা বেগম বলেন, ‘মেয়েকে ফিরে পেয়েছি। কিন্তু শারীরিকভাবে খুবই দুর্বল। উঠতে পারে না, বসতে পারে না। স্বজনদের চিনতে পারলেও ঠিকভাবে কথা বলতে পারে না।’
হাসিনা বেগম বলেন, রাজিয়ার এখন উন্নত চিকিৎসা দরকার। কিন্তু আর্থিকভাবে সচ্ছল না হওয়ায় সে ব্যবস্থা করতে পারছেন না।