নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে প্রতিপক্ষকে গুলি করার ভাইরাল ভিডিওতে থাকা মো. শহিদুল্যা রাসেল ওরফে কেচ্ছা রাসেলকে (২৯) গ্রেপ্তার করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত দুইটায় উপজেলার সিরাজপুর ইউনিয়নের লোহারপোল এলাকার শ্বশুরবাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ বলছে, রাসেল তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী। তাঁর বিরুদ্ধে কোম্পানীগঞ্জ থানায় বিভিন্ন অপরাধের ২৩টি মামলা রয়েছে। রাসেল কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার ঘনিষ্ঠ অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
এ ছাড়া একই রাতে পুলিশ মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম ওরফে শাহিন চৌধুরীকে (৪২) গ্রামের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। তাঁর বিরুদ্ধে থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দুটিসহ পাঁচটি মামলা রয়েছে। নজরুল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানু রহমানের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
আজ বুধবার সকালে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শহিদুল্যা রাসেল একজন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী। পলাতক অবস্থায় তিনি বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার অনুসারী হয়ে এলাকায় বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম, ত্রাস সৃষ্টি, চুরি, ডাকাতি, পুলিশের সরকারি কাজে বাধা প্রদানসহ বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে আসছেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের আইনানুগ এবং নিয়মিত ব্যবস্থা গ্রহণের অংশ হিসেবে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ছদ্মবেশে রাসেল শ্বশুরবাড়ি থেকে পালানোর চেষ্টা করেন। তবে পুলিশ তাঁকে আটক করতে সক্ষম হয়। এ সময় তাঁর হাতে থাকা শপিং ব্যাগে একটি এলজি, একটি লোহার তৈরি পাইপগান ও তিনটি তাজা গুলি পাওয়া যায়। রাসেল বসুরহাট পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সফি উল্যার ছেলে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, রাসেল পৌর মেয়র কাদের মির্জার প্রতিপক্ষ মিজানুরের অনুসারীদের ওপর হামলা ও গুলি চালানো ছাড়াও স্থানীয় সাংবাদিক প্রশান্ত সুভাষ চন্দের বাড়িতে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর করেন ও তাঁকে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করেন।
এর মধ্যে গত ১৩ মে বসুরহাট পৌরসভার করালিয়া এলাকায় মিজানুরের অনুসারীদের দিকে তাঁর গুলি ছোড়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ওই ভিডিওতে রাসেলের সহযোগী আনোয়ার হোসেন ওরফে পিচ্চি মাসুদকে রিভলবার হাতে দেখা গেছে। তাঁকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
রাসেলকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তারের বিষয়ে বক্তব্য জানতে কাদের মির্জার মুঠোফোনে ফোন দিলে ধরেন অন্য এক ব্যক্তি। প্রথম আলোর প্রতিবেদক পরিচয় পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি ফোনের সংযোগ কেটে দেন।