২০২০ সালের জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল। গ্রেট বিম করার পর প্রায় ছয় মাস নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে।
বিদ্যালয়ের ভবনের নির্মাণকাজের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে এক বছর আগে। কিন্তু এখনো ওই ভবনের পিলার নির্মিত হয়নি। করোনার কারণে প্রায় দেড় বছর পর বিদ্যালয় খুললেও শ্রেণিকক্ষের সংকটের কারণে বিদ্যালয়টির পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
এমন অবস্থা পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা সদর ইউনিয়নের আলেয়া রহমান লেডিস ক্লাব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
শিক্ষক ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের একমাত্র ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় পরিত্যক্ত ঘোষণা করে ওই স্থানে নতুন ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে প্রায় চার বছর আগে।
উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে দরপত্রের মাধ্যমে ওই বিদ্যালয়টির পাঁচ কক্ষবিশিষ্ট দ্বিতল ভবনের নির্মাণকাজের দায়িত্ব পায় বরিশালের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এসএইচ এন্টারপ্রাইজ। নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৯০ লাখ ৯২ হাজার ৬২২ টাকা। ২০২০ সালের জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল। ইতিমধ্যে বিল বাবদ ১৫ লাখ টাকা নিয়েছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, ভবনটির গ্রেট বিম করা হয়েছে। পিলারের জন্য রড বের করে রাখা হয়েছে, যাতে মরচে পড়েছে। বিদ্যালয়ের ভবন না থাকায় পাশে একটি টিনশেডে পাঠদান করছেন শিক্ষকেরা।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাজেরা বেগম বলেন, ‘ভবনের নির্মাণকাজ ফেলে রাখায় পাঠদানে ব্যাঘাত ঘটছে। বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মহোদয়কে জানিয়েছি।’
শিক্ষক ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কোন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এই কাজ পেয়েছে, তা তাঁরা জানেন না। তবে বাউফল সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের এক নেতা প্রায় দেড় বছর আগে ভবনটির নির্মাণকাজ শুরু করেন। গ্রেট বিম করার পর নির্মাণকাজ ফেলে রাখা হয়েছে।
পঞ্চম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী বলে, প্রায় দেড় বছর পর বিদ্যালয় খুলেছে। কিন্তু বিদ্যালয় ভবনের নির্মাণকাজ ফেলে রাখায় তাদের টিনশেডে ক্লাস হচ্ছে। বৃষ্টির সময় পানি পড়ে। আর গরমের সময় ক্লাসে বসে থাকতে খুবই কষ্ট হয়।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এসএইচ এন্টারপ্রাইজের তদারকের দায়িত্বে থাকা আবু সায়েম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বরাদ্দ নাই। আমার জানামতে যে পরিমাণ কাজ হয়েছে, তার বেশি বিল পাননি। খুব শিগগির আবার ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হবে।’
ভবনের কাজটি দ্রুত শেষ করার জন্য উপজেলা প্রকৌশলীকে অনুরোধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রিয়াজুল হক।
উপজেলা প্রকৌশলী সুলতান হোসেন বলেন, কাজে ধীরগতি দেখে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে তিন দফায় চিঠি দেওয়া হয়েছে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার জন্য। এরপরও নির্মাণকাজ শুরু হয়নি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্মাণকাজ শেষ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।