ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সহিংসতার এক মাসের পূর্ণের দিন ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ও সরকার উৎখাতের পরিকল্পনার অভিযোগে জেলা হেফাজতের সহকারী প্রচার সম্পাদক মুফতি জাকারিয়া খানসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার রাত থেকে আজ সোমবার সকাল পর্যন্ত পুলিশের বিশেষ অভিযানে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
জাকারিয়া শহরের কান্দিপাড়ার জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক। জেলা পুলিশের একটি বিশেষ দল তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে। আজ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সহিংসতার এক মাস পূর্ণ হয়েছে। এক মাসের মাথায় এই প্রথম পুলিশ হেফাজতে ইসলামের পদধারী কোনো নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে। এসব ঘটনায় হওয়া মামলায় এখন পর্যন্ত ৩৬৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশের ভাষ্য, জিজ্ঞাসাবাদে মুফতি জাকারিয়া খান পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন যে গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের নির্দেশে জামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকেরা ব্যাপক সহিংসতা চালিয়েছে। সে সময় তাঁর ও জ্যেষ্ঠ নেতাদের নির্দেশে হেফাজতের ছাত্র-শিক্ষকেরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে। জেলাজুড়ে হেফাজতের কর্মী-সমর্থকেরা ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালান। জেলার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫৬টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ৪০ হাজারের বেশি ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৪১৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বাকি সবাই অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারী। ৫৬টির মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় ৪৯টি, আশুগঞ্জ থানায় ৪টি, সরাইল থানায় ২টি ও আখাউড়া রেলওয়ে থানায় ১টি মামলা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) মো. রইছ উদ্দিন বলেন, পুলিশের বিশেষ অভিযানে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে জেলা হেফাজতের সহকারী প্রচার সম্পাদক মুফতি জাকারিয়াও আছেন। সরকার উৎখাতের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সহিংসতায় চালানো হয়েছে বলে তিনি পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন।