ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত টিনের ঘর ধসে পড়ে চার শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জেলা শহরের পশ্চিম পাইকপাড়ায় শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
আহত শিক্ষার্থীরা হলো বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী সামিয়া আক্তার (৭) ও হাবিবা আক্তার (৭) এবং দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মারিয়া আক্তার (৮) ও নাজমুল মিয়া (৮)। আহত শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে সামিয়া ও নাজমুলের অবস্থা গুরুতর। এই শিক্ষার্থীরা ঘরটির পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একসময় পুরোনো টিনশেড ঘরে শিক্ষা কার্যক্রম চলত। ঘরটি পুরোনো হওয়ায় কয়েক বছর আগে পাশে আধাপাকা ভবণ নির্মাণ করে সেখানে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছিল। এর পর থেকে জরাজীর্ণ টিনশেডের ঘরটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিদ্যালয় ছুটি হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা পরিত্যক্ত ও জরাজীর্ণ পুরোনো স্কুলঘরের পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল। হঠাৎ টিনের স্কুলঘরটি ধসে পড়ে। এতে সামিয়া, হাবিবা, মারিয়া ও নাজমুল আহত হয়। খবর পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান চালায়। আহত চার শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি আমার মেয়েকে স্থানীয় আরেকটি বিদ্যালয় থেকে নিয়ে আসতে ওই বিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। এ সময় বিকট শব্দ শুনতে পাই। তাকিয়ে দেখি বিদ্যালয়ের পুরোনো টিনের ঘরটি ভেঙে পড়েছে। আমি দৌড়ে কাছে গিয়ে দেখি তিন শিশু পুকুরের পানিতে পড়ে গেছে। একজন আহত হয়ে ভেতরে ছিল। পরে অন্যান্যদের নিয়ে আহত শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করি।’
স্কুলের পাশের বাড়ির বাসিন্দা নাসির খান বলেন, ‘বিদ্যালয়ের পুরোনো ঘরটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সব সময় আতঙ্কে থাকতাম। ঝুঁকিপূর্ণ এই বিদ্যালয়ের বিষয়টি জানিয়ে জেলা প্রশাসনে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু কোনো প্রতিকার পাইনি। অবশেষে আজকে ভবনটি ধসে পড়ল।’
শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মফিদুল ইসলাম বলেন, বিকট শব্দ শুনতে পেয়ে শিক্ষকেরা দৌড়ে গিয়ে পরিত্যক্ত ঘরটি ধসে পড়েছে দেখতে পান। আহত শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করানো হয়েছে।