ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বনভোজনে গিয়ে একটি বিলের পানিতে ডুবে মো. শ্রাবণ (১৫) নামের অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী মারা গেছে। রোববার বিকেল চারটার দিকে সদর উপজেলার মজলিশপুর ইউনিয়নের আমিরপাড়া গ্রামের লইসকার বিলে এ ঘটনা ঘটে।
স্কুলছাত্র শ্রাবণ জেলা শহরের পশ্চিম পাইকপাড়া ব্যাংক কলোনি এলাকার মো. রনি খানের ছেলে। সে ব্রাহ্মণবাড়িয়া উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘণ্টাখানেক চেষ্টা চালিয়ে বিল থেকে ওই শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম ভূইয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘বেলা দুইটার দিকে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বর থেকে আমাদের কাছে ফোন আসে। বেলা তিনটার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আমার উদ্ধারকাজ শুরু করি। কিশোরগঞ্জের ডুবুরি দলকে ঘটনাস্থলে আসতে আমরা খবর পাঠিয়েছিলাম। এর মধ্যেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এবং স্থানীয় লোকজন পানিতে নেমে উদ্ধারকাজ শুরু করি। পরে একপর্যায়ে স্থানীয় জেলেরা পানিতে জাল ফেলেন। জালেই ওই শিক্ষার্থীর লাশ আটকা পড়ে। চারটার দিকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।’
নিহতের পরিবার, স্থানীয় লোকজন, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রোববার সকালে ১৫ থেকে ২২ বছর বয়সী ৩২ জন কিশোর-তরুণ জেলা শহরের মেড্ডা এলাকার তিতাসপাড়া থেকে নৌকায় ওঠেন। তাঁরা মূলত নৌকায় করে তিতাস নদীতে বনভোজনের উদ্দেশে বের হন। নতুন পানি দেখে কিশোর-তরুণেরা ওই নদীর একটি বিলের মধ্যে লাফালাফি শুরু করেন। বেলা দুইটার দিকে নদীর আমিরপাড়ার লইসকার বিলের পানিতে নৌকা থেকে ঝাঁপ দেয় শ্রাবণ। এভাবে দুইবার লাফ দেওয়ার পর তৃতীয়বার শ্রাবণ ডুবে যায়। তার সঙ্গে থাকা বন্ধুরা শ্রাবণকে খোঁজাখুঁজি শুরু করে ব্যর্থ হলে পরে বিষয়টি এলাকার স্থানীয় জেলেদের জানানো হয়। জেলেরাও চেষ্টা করে শ্রাবণকে উদ্ধার করতে না পারলে শ্রাবণের এক বন্ধু জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে। ফোন পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয় লোকজন ও জেলেদের সহায়তায় জাল ফেলে শ্রাবণের লাশ উদ্ধার করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের নেতা আবদুল কাদির জানান, বনভোজনে গিয়ে বিলের পানিতে লাফ দিয়ে পড়ে ওই কিশোর নিখোঁজ হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের আটজন কর্মী, স্থানীয় লোকজন ও জেলেদের সহায়তায় উদ্ধারকাজ শুরু করা হয়। প্রায় এক ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে জেলেদের জাল দিয়ে পানির নিচ থেকে শ্রাবণের লাশ উদ্ধার করা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরানুল ইসলাম জানান, ‘বনভোজনে গিয়ে বিলের পানিতে ডুবে এক স্কুলছাত্র মারা গেছে বলে স্থানীয় বিভিন্ন লোকজনের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। তবে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি।’