জামালপুরে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ফেলে যাওয়া চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার ৫০টি উত্তরপত্র অবশেষে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষের কাছে ফেরত দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার বেলা দুইটার দিকে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. সামছুল ইসলামের কাছে উত্তরপত্রের বান্ডিলটি হস্তান্তর করে জামালপুর সদর থানার পুলিশ।
জামালপুর শহরের ভকেশনাল মোড়ে গত সোমবার রাতে সিএনজিচালিত অটোরিকশার ভেতরে বাংলা প্রথম পত্র বিষয়ের ৫০টি উত্তরপত্রের একটি বান্ডিল পান অটোরিকশার চালক জয়নাল আবেদীন। পরে আরেক অটোরিকশাচালককে নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার রাতে খাতার বান্ডিলটি তিনি জামালপুর সদর থানায় জমা দেন।
অটোরিকশাচালক ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাতে অটোরিকশার মধ্যে এসএসসি পরীক্ষার খাতার ওই বান্ডিলটি পান চালক জয়নাল আবেদীন। পরে তিনি আরেক চালক আবু সাঈদকে বিষয়টি জানান। মঙ্গলবার রাতে জামালপুর সদর থানায় উত্তরপত্রগুলো জমা দিতে যান সাঈদ। পরে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালেমুজ্জামান তাঁকে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন। ওসির পরামর্শ মোতাবেক মঙ্গলবার রাতেই জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সাঈদ জামালপুর সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে উত্তরপত্রগুলো জমা দেন। জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে খবর পেয়ে ময়মনসিংহ মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. সামছুল ইসলাম আজ বুধবার দুপুরে সদর থানায় এসে আরও একটি জিডি করেন। পরে ওসি মো. সালেমুজ্জামান তাঁর হাতে উত্তরপত্রগুলো তুলে দেন।
খাতাগুলো থানায় নিয়ে আসা চালক আবু সাঈদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই চালক যখন আমাকে উত্তরপত্রগুলো দেন, তখন আমি বুঝতে পারি এখানে অনেক পরীক্ষার্থীর পাস-ফেলের বিষয় আছে। তাই উত্তরপত্রগুলো সঠিক মানুষের হাতে পৌঁছানোর দরকার মনে করে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে থানায় জমা দিই। ওই অটোরিকশার চালক জানিয়েছেন, খাতার বান্ডিলসহ এক যাত্রী ময়মনসিংহ থেকে জামালপুরে এসেছিলেন। ওই যাত্রী জামালপুরের কোন বিদ্যালয়ের শিক্ষক, সেটি জানা নেই।’
ময়মনসিংহ মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. সামছুল ইসলাম বলেন, ওই শিক্ষককে এখনো চিহ্নিত করা যায়নি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ওই শিক্ষককে খোঁজ করে দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে উত্তরপত্রগুলোর বিষয়ে জানতে পারি। পরে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। পরে তাঁরা সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে উত্তরপত্রগুলো নিয়ে গেছেন।’
জামালপুর সদর থানার ওসি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সব প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তার হাতে উত্তরপত্রগুলো তুলে দেওয়া হয়েছে। উত্তরপত্রগুলো হারিয়ে গেলে ৫০ জন পরীক্ষার্থীর খুবই ক্ষতি হতো। ওই চালক বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে থানায় ছুটে আসেন।’