রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) মহান বিজয় দিবসে জাতীয় পতাকা বিকৃত করে উপস্থাপন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে। এ জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সুপারিশসহ এ–সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে এই ঘটনায় গঠিত রংপুর জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি।
প্রতিবেদনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর কাছে পাঠানো হয়েছে।
আজ বুধবার রংপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আসিব আহসান বলেন, জাতীয় পতাকা বিকৃতির ঘটনায় রংপুর জেলা প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম রব্বানী গতকাল মঙ্গলবার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে জাতীয় পতাকা বিকৃতির অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। ডিসি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। সে কারণে তদন্ত প্রতিবেদনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে পাঠানো হয়েছে।
১৭ ডিসেম্বর রংপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির প্রধান ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম রব্বানী। অন্য সদস্যরা হলেন নগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সদরুল আলম দুলু ও মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার জিন্নাহ আল মামুন।
এদিকে পতাকা বিকৃতির ঘটনার এক সপ্তাহ পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাকাস্থ লিয়াজোঁ অফিসে সিন্ডিকেটের ৭৩তম বিশেষ সভায় তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়েছে।
১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা স্মারকে বিকৃত পতাকা নিয়ে ছবি তোলেন বিশ্ববিদ্যালয়টির কয়েকজন শিক্ষক। পরে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নিন্দার ঝড় ওঠে। এ ঘটনায় ৯ শিক্ষকসহ উপাচার্যের নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষক ও একজন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা তাজহাট থানায় দুটি মামলা করেন। ২০ ডিসেম্বর রংপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক শওকত আলী দুটি অভিযোগ তদন্ত করে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
অন্যদিকে, এ ঘটনার পর থেকে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির দাবিতে ক্যাম্পাস ও পার্কের মোড়ে বিক্ষোভ সমাবেশ, মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।