বৃষ্টি হলেই সাতকানিয়ায় আদালতে জলাবদ্ধতা

পানিনিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই চট্টগ্রামের সাতকানিয়া আদালত প্রাঙ্গণ পানিতে ডুবে যায়। গত সপ্তাহের ভারী বর্ষণে পানি জমে এখনো জলাবদ্ধ আদালত প্রাঙ্গণ। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে। প্রথম আলো
পানিনিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই চট্টগ্রামের সাতকানিয়া আদালত প্রাঙ্গণ পানিতে ডুবে যায়। গত সপ্তাহের ভারী বর্ষণে পানি জমে এখনো জলাবদ্ধ আদালত প্রাঙ্গণ। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে।  প্রথম আলো

বৃষ্টি হলেই চট্টগ্রামের সাতকানিয়া আদালত ভবন জলাবদ্ধ হয়ে পড়ছে। সাম্প্রতিক টানা ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যার পানিতে আদালত প্রাঙ্গণসহ আশপাশের এলাকা কোমরসমান পানিতে তলিয়ে যায়। বন্যার পানি আশপাশের এলাকা থেকে সরে গেলেও আদালত প্রাঙ্গণে গত বৃহস্পতিবারও হাঁটুসমান পানি ছিল। এতে আদালতে বিচারিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

 আদালত সূত্র জানায়, ১২-১৩ দিন আগে বৃষ্টি শুরু হলে সাতকানিয়া আদালতের গেট থেকে অভ্যন্তরীণ রাস্তা, মাঠ ও আদালতের আশপাশে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। পানিনিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় এ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

সূত্র জানায়, এখান থেকে সাতকানিয়া ‍যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালত, সাতকানিয়া জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ আদালত, অতিরিক্ত সহকারী জজ আদালত ও লোহাগাড়া সহকারী জজ আদালতের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। সাম্প্রতিক বন্যায় পুরো আদালত প্রাঙ্গণ কোমরসমান পানিতে ডুবে গিয়েছিল। বিচারকদের বাসভবনেও পানি ঢুকে পড়ে। পানিনিষ্কাশন ব্যবস্থার অভাবে আদালত প্রাঙ্গণ ও বিচারকদের বাসভবন এলাকা এখনো জলাবদ্ধ হয়ে আছে।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, আদালত এলাকায় আইনজীবী, আইনজীবীর সহকারী, বিচারপ্রার্থী ও সাক্ষীদের তেমন আনাগোনা নেই। আদালতের কয়েকজন কর্মচারী বা দুই-একজন বিচারপ্রার্থী হাঁটুসমান পানি মাড়িয়ে চলাফেরা করছেন। জমে থাকা পানি থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে চারপাশে।

 সাতকানিয়া উপজেলা সদরের বিচারপ্রার্থী মোরশেদ আলম ও কেঁওচিয়ার আয়ুব আলী প্রথম আলোকে বলেন, পরপর দুই দিন আদালতে আসতে হয়েছে। পুরো আদালত প্রাঙ্গণ পানিতে ডুবে আছে। আদালত এলাকা পানিতে ডুবে থাকায় হয়তো আইনজীবীরা আসেননি।

 আদালতের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ সোলাইমান প্রথম আলোকে বলেন, ১৩৯ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত সাতকানিয়া আদালতে অবকাঠামোসহ কোনো ধরনের উন্নয়ন হয়নি। সরকারের এত উন্নয়নের মধ্যে পুরোনো আদালতের চেহারা পাল্টে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু চেহারা পাল্টায়নি বরং বৃষ্টি হলে আদালত এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। এতে আইনজীবীসহ আদালতে আসা লোকজন তাঁদের প্রয়োজনীয় কাজ সারতে সমস্যা হয়। সাতকানিয়া জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, আদালত এলাকা পানিতে ডুবে থাকায় বিচারিক কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলছে না। বিচারক, আইনজীবী, আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনজীবীর সহকারীসহ বিচারপ্রার্থী লোকজন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। এ ব্যাপারে স্থানীয় পৌরসভার মেয়রকে বেশ কয়েকবার অবহিত করা হয়েছে। কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

জানতে চাইলে সাতকানিয়া পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ জোবায়ের প্রথম আলোকে বলেন, ‘আদালত প্রাঙ্গণে জলাবদ্ধতার বিষয়টি আমি দেখে এসেছি। ওই এলাকাটা নিচু, তাই আদালত প্রাঙ্গণ ভরাট করতে হবে। পাশাপাশি পানিনিষ্কাশনের জন্য পরিকল্পিতভাবে নালাও তৈরি করতে হবে। আপাতত সেচ পাম্পের মাধ্যমে পানি সরানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’