চট্টগ্রাম নগরে বৃষ্টি থেমেছে গত সোমবার। ওই সময়ের ভারী বর্ষণে তলিয়ে যাওয়া কিছু এলাকা থেকে এখনো পানি নামেনি। আজ বৃহস্পতিবারও এসব এলাকার রাস্তাঘাট ও অলিগলিতে গোড়ালি থেকে হাঁটুসমান পানি জমেছে। এতে স্থানীয় বাসিন্দারা কষ্ট পাচ্ছেন।
আজ দুপুর পর্যন্ত পানি জমে রয়েছে নগরের বহদ্দারহাটের বারইপাড়া, পুকুরপাড় ও বড় কবরস্থান এলাকায়।
নগরের বারইপাড়া এলাকার বাসিন্দা মৃদুল বিশ্বাস বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিয়ে কী যে কষ্টে আছি তা বলে বোঝানো সম্ভব নয়। বৃষ্টি হলেও পানি ওঠে, না হলে জোয়ারের পানি ওঠে। গত শুক্রবার পানি উঠেছে, এখনো নামেনি। এই যন্ত্রণা থেকে বাঁচতে অন্য এলাকায় চলে যেতে ইচ্ছে করে।’
সরেজমিন দেখা গেছে, বারইপাড়া এলাকার রাস্তাঘাট থেকে পানি পুরোপুরি নামেনি। রাস্তায় জমে থাকা পানির মধ্যে চলাচল করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আবার আশপাশের বাড়িঘর থেকে পানি নামলেও উঠানে জমেছে। এই জমে থাকা পানিতে উৎকট গন্ধ বের হচ্ছে।
নগরের বাকলিয়ার বড় কবরস্থান এলাকার বাসিন্দা জাবেদ হোসেন বলেন, বৃষ্টি থেমেছে চার দিন আগে। কিন্তু পানি নামছে না। এর মধ্যে চাকরিতে যেতে হচ্ছে। বাজারসদাই করতে হচ্ছে। মানুষের কষ্ট কমানোর জন্য সিটি করপোরেশন, সিডিএর (চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) কোনো মাথাব্যথা নেই।
ভারী বর্ষণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় চলতি সপ্তাহে বেশ দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে চট্টগ্রাম নগরবাসীকে। বিভিন্ন এলাকায় দিনের পর দিন পানি জমে রয়েছে। এভাবে জলাবদ্ধতা হওয়ার কারণ খুঁজে বের করতে চার সদস্যের কমিটি গঠন করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। ১০ দিনের মধ্যে কমিটিকে কারণ চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত হওয়া বৃষ্টিতে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। কিছু কিছু এলাকায় টানা সাত দিন ধরে পানি জমে আছে। খোদ সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর বহদ্দারহাটের বাড়িতে পানি জমেছিল তিন দিন ধরে। ভারী বর্ষণে হওয়া জলাবদ্ধতার কারণে নগরের মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। এভাবে জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগ সৃষ্টি হওয়ায় গতকাল বুধবার জরুরি সভায় বসেন নগরের সেবা সংস্থার প্রতিনিধিরা।
বর্তমানে চট্টগ্রাম নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে ১০ হাজার ৯২১ কোটি টাকা ব্যয়ে চারটি প্রকল্পের কাজ চলছে। সিডিএ, সিটি করপোরেশন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। একটি প্রকল্পও নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে পারেনি সংস্থাগুলো। বারবার মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে।