বুড়িগঙ্গার তীর দখল করে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ১৬৪টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। আজ মঙ্গলবার বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তারা কেরানীগঞ্জ ও কামরাঙ্গীরচর এলাকায় বুড়িগঙ্গার তীরে এসব উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন।
উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেন বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান ও দীপ্তিময়ী জামান।
সরেজমিনে দেখা যায়, কামরাঙ্গীরচর থানার খোলামোড়া ঘাট এলাকায় চারটি ছাপরা টিনশেডের টং ঘর ও দুটি সাততলা ভবনের প্রায় পাঁচ ফুট বর্ধিতাংশ ভেঙে দেওয়া হয়। এরপর কেরানীগঞ্জের খোলামোড়া নবাবচর এলাকার খলিলের ডেইরি ফার্ম, হাসান আলীর ১৭টি টিনশেডের ছাপরা ঘরসহ ১৫৩টি ছোট-বড় টিনশেড ঘর উচ্ছেদ করা হয়।
এ সময় কেরানীগঞ্জের খোলামোড়া ঘাট এলাকার খলিল ডেইরি ফার্মের পরিচালক মাইনুল ইসলাম অভিযোগ করেন, তাঁর বাবা খলিল মিয়া ১১ কাঠা জায়গা কিনে সেখানে গরুর খামার করেন। বিআইডব্লিউটিএর লোকজন সরকারি জমি দাবি করে খামারের জায়গা উচ্ছেদ করেছেন।
নবাবচর এলাকার বাসিন্দা হাসান আলীর অভিযোগ, প্রায় ৩০ বছর আগে তাঁরা ওই এলাকায় ১৪ কাঠা জমি কিনে বসতবাড়ি করেছেন। সেখানে ২০টি টিনশেড ঘর ছিল। উচ্ছেদকারীরা নদীর জায়গা দাবি করে তাঁর ঘর গুঁড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁদের স্থাপনাগুলো সরিয়ে নেওয়ার সময় দেওয়া হয়নি। এমনকি স্থাপনা উচ্ছেদের ব্যাপারে কোনো নোটিশও দেওয়া হয়নি।
অভিযোগের বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক এ কে এম আরিফউদ্দিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী এবং নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশে বিআইডব্লিউটিএর পক্ষ থেকে এ উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। সপ্তাহে তিন দিন করে ১১ দিন অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান চলবে। তিনি বলেন, উচ্ছেদ অভিযানে উদ্ধারকৃত বুড়িগঙ্গার তীরে ওয়াকওয়ে নির্মাণসহ স্থায়ীভাবে তীরভূমি সংরক্ষণ করা হবে। বুড়িগঙ্গার দুই পাড়ে যত বড় শক্তিশালী অশুভ শক্তি আসুক না কেন, তা মোকাবিলা করে নদীর উভয় পাড় দখল করে রাখা যত বড় ভবনই হোক, তা গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে।
ঢাকা নদীবন্দরের উপপরিচালক মিজানুর রহমান, এ কে এম কায়সারুল ইসলামসহ পুলিশ ও আনসার সদস্যরা উচ্ছেদ অভিযানে অংশ নেন।